সব অক্সিজেন শুষে নেয় এই রকেট, ফুসফুস ফেটে মৃত্যু, ভারতের কাছেও আছে, কীরকম?
আজ তক | ১০ মে ২০২৪
এমন একটি রকেট যেটি অক্সিজেন শুষে নেয়। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ইউক্রেনকে আক্রমণ করতে রাশিয়া এমনই একটি রকেট ব্যবহার করছে। এই রকেটগুলি যেখানে পড়ে সেখানে আশপাশের অক্সিজেন চুষে নেয়। যখন একযোগে কয়েক ডজন বা শতাধিক রকেট নিক্ষেপ করা হয়, তখন লক্ষ্যবস্তুর চারপাশের পুরো এলাকা অক্সিজেনের অভাবে ভুগতে শুরু করে। এতে শত্রুপক্ষের জওয়ানদের অবস্থাও খারাপ হয়। তাদের মৃত্যুও হতে পারে।
এই অস্ত্রের নাম TOS-2 Tosochka। এটি রাশিয়ার একটি রকেট লঞ্চার সিস্টেম। যেখানে থার্মোবারিক ওয়ারহেড ইনস্টল করা আছে। রাশিয়ান সেনাবাহিনী ২০২১ সাল থেকে এটি ব্যবহার করছে। একটি রকেট সিস্টেমে ২২০ মিমি ক্যালিবারের ১৮টি রকেট থাকে। তাদের পরিসীমা ১০ কিলোমিটার।
একইভাবে এর পুরানো সংস্করণটি TOS-1। এই দুই অস্ত্রের সামনে কোনও সৈনিক আসতে চান না। কারণ, এই রকেট মাটিতে পড়া মাত্র চারপাশের অক্সিজেন শুষে নেয়। ভারত চাইলে নিজেও এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। ভারতের পিনাকা রকেট সিস্টেম রয়েছে। যেখানে থার্মোবারিক ওয়ারহেড স্থাপন করা যেতে পারে।
তার আগে জেনে নেওয়া দরকার থার্মোবারিক অস্ত্র বা ওয়ারহেড কী? এটি লক্ষ্যের চারপাশের সমস্ত অক্সিজেন কীভাবে শুষে নেয়?
থার্মোবারিক অস্ত্র কী? থার্মোবারিক অস্ত্রকে অ্যারোসল বোমা বা ভ্যাকুয়াম বোমাও বলা হয়। অনেক উপায়ে এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এই রকেট বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস, তরল বা পাউডার বিস্ফোরকের অ্যারোসল ছড়িয়ে দেয়। সাধারণত এগুলি সাঁজোয়া যানের ভিতরে সৈন্যদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। বিল্ডিং বা বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকা শত্রুদের বের করার জন্য এটি করা হয়। সৈন্যরা যখন বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে আসে, তাদের আলতোভাবে চিহ্নিত করুন। এতে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। তখন অক্সিজেন কমে যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, আমেরিকান ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) এর একটি গবেষণায় জানিয়েছে যে, যখন একটি থার্মোবারিক অস্ত্র বিস্ফোরিত হয়, তখন তা থেকে একটি চাপ তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়। যার কারণে ফুসফুস ফেটে যায়। এতে উপস্থিত বিস্ফোরক থেকে রাসায়নিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সেনাদের শরীরে প্রবেশ করে। ভিতর থেকে শরীর পুড়িয়ে দাও। সাধারণত FAE জ্বালানি, ইথিলিন অক্সাইড, প্রোপিলিন অক্সাইড এতে যোগ করা হয়। এগুলো অত্যন্ত বিষাক্ত। শরীরের ভিতরে অদৃশ্য ক্ষত হয়। কানের পর্দা ফেটে যায়। এর বিস্ফোরণে চারপাশে ঝাপসা হয়ে যায়। শরীরের ভিতরের অঙ্গগুলো ফেটে যায়। দৃষ্টি থেমে যায়। ভারতে বর্তমানে অর্জুন ট্যাঙ্কে ব্যবহারের জন্য উচ্চ-বিস্ফোরক স্কোয়াশ হেড (HEAD) থার্মোবারিক শেল রয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনী অন্য কোনও থার্মোবারিক অস্ত্র ব্যবহার করে না।