ভেটের দিন এগিয়ে আসছে। কিন্তু জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের আরএসপি প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ মণ্ডলের প্রচারে তেমন কর্মী-সমর্থকের ভিড় কই!
একসময়ে বাম শরিক আরএসপি-র শক্ত ঘাঁটি ছিল জয়নগর। ১৯৮০ সাল থেকে টানা আট বার এই কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন আরএসপি প্রার্থী সনৎকুমার মণ্ডল। বর্তমানে আরএসপি-র সংগঠন অনেকটাই দুর্বল। এ বার বাম-কংগ্রেস জোটের হয়ে লড়ছেন আরএসপি-র সমরেন্দ্রনাথ। কয়েকদিন হল প্রচার শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু প্রচারে এখনও সে ভাবে কর্মীদের দেখা মিলছে না!
পরিস্থিতি যে কঠিন, মেনে নিচ্ছেন প্রার্থী নিজেও। শুক্রবার সকালে বাসন্তী বিধানসভায় টোটোতে চেপে ভোটের প্রচার করেন তিনি। চারটি টোটোতে দলের জনা পনেরো কর্মী নিয়েই বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন। জোটের প্রার্থী হলেও কংগ্রেস নেতা-কর্মীদেরও সে ভাবে প্রচারে দেখা যাচ্ছে না।
প্রার্থী বলেন, “এটা ঠিক যে আমরা এই কেন্দ্রে জেতার মতো পরিস্থিতিতে নেই। তবে আমাদের ভোট যাতে বাড়ে, সেই চেষ্টা করছি। তৃণমূলের লাগাতার সন্ত্রাসের কারণে বামকর্মীরা অনেক জায়গাতেই প্রচারে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।” তৃণমূল সন্ত্রাসের অভিযোগ মানেনি।
সমরেন্দ্রনাথের প্রচারে কংগ্রেস কর্মীদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘আমরা জেলার প্রতিটি ব্লকের কংগ্রেস নেতৃত্বের নাম, ফোন নম্বর বামফ্রন্টকে দিয়ে দিয়েছি। ওঁরা যোগাযোগ করছেন। এ দিন কাউকেই ডাকেননি ওঁরা। সঠিক কী কারণ ছিল, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আরএসপি প্রার্থী সনৎ মণ্ডল ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। ২০০৯ সাল থেকেই এই কেন্দ্রে বামেদের ফল খারাপ হতে শুরু করে। সে বছরের লোকসভা ভোটে আরএসপি প্রার্থী নিমাই বর্মণ ৪২.৮৬ শতাংশ ভোট পেয়েও হেরে যান তৃণমূল-এসইউসি জোটের প্রার্থী তরুণ মণ্ডলের কাছে। ২০১৪-র নির্বাচনে বামেদের ভোট আরও কমে। ৩২.৫৮ শতাংশ ভোট পান আরএসপি প্রার্থী সুভাষ নস্কর। ২০১৯ সালে আরএসপি প্রার্থী সুভাষ পান মাত্র ৫.০১
শতাংশ।
তবে মানুষ ভোট দিতে পারলে, ফলাফল অন্যরকম হতে পারে বলে আশাবাদী প্রার্থী সমরেন্দ্রনাথ। তাঁর কথায়, “মানুষ যদি ভোট দিতে পারেন, আর রাজনৈতিক সমীকরণ যদি ঠিক থাকে, তা হলে ভোটের ফল অন্য কিছুও হতে পারে।” তাঁর এই আশাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি নেতারা। দু’পক্ষেরই দাবি, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও বামপ্রার্থী এখানে বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না।