• বোলারদের দাপটে ফের মুম্বই বধ, প্রথম দল হিসেবে প্লে অফে কেকেআর...
    আজকাল | ১২ মে ২০২৪
  • সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: ১০ বছর আগের স্মৃতি ফেরাল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৪ সালে দু"বার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছিল নাইটরা। একবার কটকে, অন্যবার আবু ধাবিতে। এক দশক পরে আবার সেই স্মৃতি ফিরল। শনিবার ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ১৮ রানে হারল নাইটরা। ওয়াংখেড়ের পর ইডেনে। এক সপ্তাহে দু"বার। কাকতালীয়ভাবে যেবার রোহিতদের বিরুদ্ধে জোড়া জয় পেয়েছিল, সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। অধিনায়ক ছিলেন গৌতম গম্ভীর। এবারও নাইটদের ডাগআউটে উপস্থিত জিজি। তবে মেন্টর হিসেবে। শনিবার রাতে মুম্বইকে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে প্লে অফ নিশ্চিত করল নাইটরা। ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট কেকেআরের। লিগের একনম্বরে বহাল। প্রথম দুইয়ে শেষ করার সম্ভাবনা প্রবল। এদিন শেষ ওভারে ২২ রান প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ৮ উইকেটে ১৩৯ রানে থামে মুম্বইয়ের ইনিংস। এবার ইডেনে কেকেআরের প্রথম ম্যাচেও শেষ ওভারে বাজিমাত করেন হরষিত রানা। বৃষ্টির জন্য খেলা ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে শুরু হওয়ায় ম্যাচ ১৬ ওভারে কমিয়ে আনা হয়। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তোলে কেকেআর। রান তাড়া করতে নেমে নাইট বোলারদের কাছে আত্মসমর্পণ মুম্বইয়ের ব্যাটারদের। ব্যর্থ রোহিত, হার্দিকরা‌। একমাত্র ঈশান কিষাণ ছাড়া কেউ রান পায়নি। রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত খেলা চললেও, স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় ভরা।‌ ম্যাচ শেষে কলকাতার দর্শকদের ধন্যবাদ জানায় কেকেআর দল। মাঠ পর্যবেক্ষণ করেন রিঙ্কুরা।‌ কেকেআরের ইনিংস শেষ হতে তখনও ৩ ওভার বাকি। হঠাৎই গ্যালারিতে উঠল রোহিত, রোহিত রব। আগের ম্যাচের মতো এদিনও ইনম্যাক্ট প্লেয়ার মুম্বইয়ের প্রাক্তন নেতা। তাই পয়া মাঠে তাঁকে ফিল্ডিং করতে দেখা যায়নি। শেষমেষ ধৈর্যচ্যুতি ঘটে ক্রিকেটের নন্দনকাননে রোহিত ভক্তদের। প্রিয় তারকাকে চাক্ষুষ করার জন্য আর তর সইছিল না ইডেনের। কলকাতার সঙ্গে রোহিতের প্রেম দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে ইডেনের সঙ্গে। এখানেই জীবনের সর্বোচ্চ রান রোহিতের। এই শহর তাঁকে খালি হাতে ফেরায় না। অধিনায়ক হিসেবেও এই মাঠে গড় ভাল। নাইটদের সঙ্গে ১০ সাক্ষাতে ৭ বার জিতেছে মুম্বই। তবে এদিন খালি হাতে ফিরল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা‌। পঁচা শামুকে পা কাটল না কলকাতা নাইট রাইডার্সের। গুজরাট এবং রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাকি থাকতেই প্লে অফ নিশ্চিত করেন শ্রেয়সরা।‌ ম্যাচের বয়স তখন ৫.৫ ওভার। বরুণ চক্রবর্তীর বল সরাসরি লাগে রোহিতের প্যাডে। আম্পায়ার নট আউট দিলেও রিভিউ নেয় কেকেআর। উদ্বিগ্ন ইডেন তখন প্রার্থনায় ব্যস্ত। না, এই আকাঙ্ক্ষা উইকেটের নয়। বরং রোহিতের পক্ষে সিদ্ধান্ত যাওয়ার। সকলের চোখ তখন জায়ান্ট স্ক্রিনে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আসতেই হাফ ছেড়ে বাঁচল ইডেন। ফের উঠল রোহিতের নামে জয়ধ্বনি। কল্লোলিনী কেকেআরের জয়ের পাশাপাশি রোহিতের ব্যাটে রান দেখতে চায়।‌ কিন্তু হিটম্যানের আসল রূপ দেখার থেকে বঞ্চিত হল ইডেন। ইনিংসের প্রথম বল থেকেই স্বচ্ছন্দে ছিলেন না। কোনওক্রমে টিকে ছিলেন। কিন্তু বরুণের বলে অদ্ভুত শটে আউট হন। ২৪ বলে ১৯ রান রোহিতের। তাতে ছিল ১টি ছয় এবং চার। লো স্কোরিং ম্যাচ। ইডেনে রান তাড়া করা যথেষ্ট কঠিন ছিল। তারমধ্যেও ভাল খেলেন ঈশান কিষাণ। ২টি ছয়, ৫টি চারের সাহায্যে ২২ বলে ৪০ করেন মুম্বইয়ের উইকেটকিপার ব্যাটার। ১০ ওভারের শেষে ২ উইকেটে ৮১ রান ছিল মুম্বইয়ের। কিন্তু রান পাননি সূর্যকুমার যাদব (১১), হার্দিক পাণ্ডিয়া (২), টিম ডেভিড (০)। ব্যাটারদের ব্যর্থতার খেসারত দিতে হল। দুর্দান্ত বল করেন বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারিন। জোড়া উইকেট নেন হরষিত রানা, আন্দ্রে রাসেলও। টসে জিতে কেকেআরকে ব্যাট করতে পাঠান হার্দিক পাণ্ডিয়া। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইসের কথা ভেবেই রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। উইকেটে একটা স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকায় প্রথমদিকে সুবিধা পায় পেসাররা। ব্যর্থ কেকেআরের ওপেনিং জুটি। চলতি আইপিএলে যা বিরল। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচেই ফিল সল্ট, সুনীল নারিন দলের জয়ের ফাউন্ডেশন গড়ে দেন। কিন্তু এদিন শূন্য রানে ফেরেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। বুমরার বলটা বুঝতেই পারেননি। অসহায়ভাবে বোল্ড হন নারিন। ৬ রানে ফেরেন সল্ট। রান পাননি শ্রেয়স আইয়ারও (৭)। একমাত্র সফল ব্যাটার ভেঙ্কটেশ আইয়ার। পায়ে চোট নিয়েও ২১ বলে ৪২ রান করেন। তাতে ছিল ২টি ছয়, ৬টি চার। তাঁকে সঙ্গ দেন নীতিশ রানা। চলতি মরশুমে প্রথমবার নেমে ২৩ বলে ৩৩ রান করেন কেকেআরের প্রাক্তন অধিনায়ক। শেষদিকে গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন আন্দ্রে রাসেল (২৪), রিঙ্কু সিং (২০), রমনদীপ সিং (১৭)। জোড়া উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বরুণ চক্রবর্তী।ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী
  • Link to this news (আজকাল)