ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট ২০ মে। তার ঠিক আট দিন আগে, আজ রবিবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোট প্রচারে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কাঁকিনাড়ায় জিলিপি মাঠে আসছেন। পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল এই একই মাঠে প্রার্থী অর্জুন সিংহের সমর্থনে এসেছিলেন মোদী। আধ ঘণ্টার বক্তৃতায় বিজেপির কাজের খতিয়ান দিয়েছিলেন। এ বারও প্রার্থী অর্জুন, একই মাঠ।
এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের কেন্দ্রে সন্দেশখালি-কাণ্ড। নারী নির্যাতন নিয়ে বিতর্ক, স্টিং ভিডিয়ো— এ সব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেন, তা নিয়ে আগ্রহ আছে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। ভিড় ভালই হবে বলে দাবি করছেন নেতারা। অর্জুন বলেন, ‘‘৫০-৬০ হাজার মানুষ সভাস্থলে বসতে পারেন, কিন্তু মাঠ আরও বড়। দু’আড়াই লক্ষ লোক হওয়া অস্বাভাবিক নয়।’’
সভার দিন ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে জিলিপি মাঠ নিয়ে এ বার অবশ্য কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল বিজেপিকে। গত বুধবার অর্জুন অভিযোগ করেছিলেন, মাঠটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে অবশ্য ভাটপাড়া পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর সভার বিষয়ে তাঁরা জানতেন না। ফলে সংস্কারের জন্য মাঠ খোঁড়া হয়েছিল। রোলার চালিয়ে তা ঠিক করা হচ্ছে।
শনিবার সভাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। মাঠের প্রবেশপথে পুলিশি পাহারা। লোহার অস্থায়ী ছাউনি তৈরি হচ্ছে রোদ-বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে। বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা ছাউনি তৈরির সরঞ্জাম খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছেন। তবে বৃহস্পতি ও শনিবারের বৃষ্টিতে ভেজা মাঠে কর্মী-সমর্থকদের বসার জায়গা কোথাও কোথাও কাদাময়।
ছাউনি তৈরি করছিলেন অভিষেক সাউ, গুড্ডু সিং-রা। তাঁদের কথায়, ‘‘খোঁড়া মাঠ ঠিক মতো ড্রেসিং হয়নি। তার উপরে ঘাস নেই। বৃষ্টিতে আরও কাদা-কাদা হয়েছে।’’ বসার জন্য গেরুয়া চেয়ার কয়েক হাজার এসেছে। পিছনের সারিতে মাটিতে ত্রিপল পেতে বসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান এক ডেকরেটর কর্মী। অর্জুন অবশ্য বলেন, ‘‘সভায় আসা সকলে যাতে ঠিক মতো বসতে পারেন, সেই খেয়াল রাখা হবে। যেখানে কাদা আছে, বালি ফেলে ঠিক করা হচ্ছে।’’
সকাল ১১.২০টা মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ভাটপাড়ায় সেনাছাউনির হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। পরে গোলঘর হয়ে সভাস্থল পর্যন্ত কয়েকশো মিটার পথ পেরিয়ে তিনি পৌঁছবেন সভাস্থলে। সেই পথে ইতিমধ্যেই পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। সাড়ে ১১টায় মঞ্চে ওঠার কথা প্রধানমন্ত্রীর। ১২.১০ মিনিট পর্যন্ত অর্জুনের সমর্থনে প্রচারসভা সেরে ফের একই পথে সেনা ছাউনির হেলিপ্যাডে পৌঁছনোর কথা তাঁর। সেখান থেকে হুগলির চুঁচুড়ায় প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
এ দিন দুপুরেই ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিকের সমর্থনে জিলিপি মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পলতা শান্তিনগর মাঠে জনসভা করতে আসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও পরে মুখ্যমন্ত্রীর সভা সোমবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনিও চপারে আসবেন, সভাস্থলের পাশেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, একই দিনে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সভা করার। দু’টি জায়গাতেই কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’’