গত বারের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। এ বার এই কেন্দ্র পুনরুদ্ধারে মরিয়া রাজ্যের শাসকদল দলীয় প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে শনিবার সাহাগঞ্জে জনসভায় যথারীতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে ভোট চাইলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দাবি করলেন, তিনি শুনেছেন, আদিসপ্তগ্রামে বিজেপি-সিপিএম ‘বাড়াবাড়ি, লাফালাফি’ করছে। তবে, এর ব্যাখ্যায় তিনি যাননি।
প্রত্যাশিত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে সিপিএম, বিজেপি —দুই দলই। তাদের দাবি, তাদের জনভিত্তি বাড়ছে এবং তৃণমূলের কমছে। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী তাদের চাপে রাখতে চাইছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় ‘বাড়াবাড়ি’র পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তারা।
সভায় মমতা বলেন, রচনাকে বুঝিয়ে তিনি রাজনীতিতে নামান। তাই তাঁর আর্জি, মানুষ যেন রচনাকে ভোট দেন। এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমি শুনছি, আদিসপ্তগ্রামে বিজেপি একটু বেশি বাড়াবাড়ি লাফালাফি করছে, আর সিপিএম। সেই জন্য আমি নিজে এসেছি আপনাদের কাছে আবেদন করে বলতে, ভোটটা কিন্তু রচনার।’’
এ প্রসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘বাড়াবাড়ি শুধু এক জনই করবেন? বাড়াবাড়ি শুধু একটা দলই করবে? বাকিরা কিছু করলেই বাড়াবাড়ি?’’ লকেটের দাবি, ওই এলাকায় তাঁদের সাংগঠনিক শক্তি বেড়েছে। আর সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের দাবি, সিপিএম অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে। তাদের কর্মসূচিতে অনেক বেশি মানুষ বেরোচ্ছেন। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী ‘ধমকাতে চমকাতে’ চাইছেন। তাঁর সংযোজন, ‘‘ওখানে সন্ত্রাস, মস্তানি, গুন্ডামি তৃণমূল করে, এলাকার মানুষ জানেন।’’
মমতা মঞ্চে ওঠেন বেলা সওয়া ২টো নাগাদ। সভায় বিশেষ ভিড় হয়নি। তৃণমূল নেতৃত্বকে বারে বারেই বলতে শোনা যায়, হেলিপ্যাডের কাছ থেকে বা মাঠের ধার থেকে লোকজন যেন মঞ্চের সামনে চলে আসেন। লকেটের দাবি, ‘‘ডানলপে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক হয়নি। মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মিথ্যা বলে রাজ্যটাকে চালাতে পারবেন না বেশিদিন।’’
ভিড় না হওয়ার কথা অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্ব মানছেন না। তাঁদের দাবি, কলকাতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মমতা এ দিন নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে চলে আসেন। সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘কে বলল ভিড় হয়নি! মাঠ ভরে গিয়েছিল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) এক ঘণ্টা আগে এসেছিলেন। না হলে ভিড় উপচে পড়ত।’’ একই কারণ দেখান দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনও।