• কেন্দ্রের ভোট-ভাগ্য ঠিক করে দিতে পারে কুলটি
    আনন্দবাজার | ১৩ মে ২০২৪
  • এক পক্ষের পর পর ভরাডুবি। আর এক পক্ষের ক্রমশ উত্থান। কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল এবং বিজেপির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে এ ভাবেই। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট থেকে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের যে পদস্খলন শুরু হয়েছে, মাঝে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট ছাড়া সমস্ত নির্বাচনেই তা বজায় রয়েছে। ২০১৪ থেকে বিজেপির রমরমা বেড়েছে এই এলাকায়। এমনকী, গত উপনির্বাচনে যখন আসানসোল কেন্দ্রে তিন লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্‌হা, সেই সময়েও কুলটিতে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থাকে তৃণমূল। ফলে, এ বার লোকসভা ভোটেও এই এলাকায় কঠিন লড়াই তৃণমূলের। গেরুয়া শিবিরের আশা, আসানসোল-জয়ে কুলটি বড় শক্তি জোগাবে তাদের।

    বিজেপি নেতৃত্ব মনে করেন, কুলটির ব্যবধানই দলের দু’টি লোকসভা ভোটে জয় নিশ্চিত করেছিল। তাই এ বারও এই কেন্দ্রে বিজেপির মূল লক্ষ্য ব্যবধান বাড়ানো। বিজেপির একাংশের অবশ্য দাবি, এলাকায় দলের পরিস্থিতি খুব অনুকূল, তা নয়। এর নেপথ্যে রয়েছে অন্তর্কলহ। প্রথম দিনের প্রচারেই দলের কিছু কর্মীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন প্রার্থী। আবার ডিসেরগড়ে কর্মী সম্মেলনে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের অনেকে হাজির হননি। স্থানীয় নেতারাই যদি দলের বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে মুখ ফেরান তাহলে ব্যবধান ধরে রাখা যাবে কী করে, প্রশ্ন রয়েছে বিজেপির অন্দরে। যদিও দলের জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, বাইরে থেকে যা দেখা যায়, তার সব সত্যি নয়। ভোট হবে মোদীর উন্নয়ন বনাম তৃণমূলের দুর্নীতিতে।’’

    তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে আবার মনে করছেন, কুলটি থেকে তাঁদের ‘লিড’ পাওয়ার আশা কম। তবে আগের ব্যবধান কমাতে পারলেই আসানসোল কেন্দ্রে দলের জয়ের পথ মসৃণ হবে। দলের একাংশের দাবি, গত কয়েকটি ভোটে যে ফল দেখা গিয়েছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সিংহভাগ অবাঙালি ভোট বিজেপির বাক্সে গিয়েছে। সেই ভোট ফের নিজেদের দিকে টানতে শত্রুঘ্ন সিন্‌হার উপরে ভরসা রেখেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। উপনির্বাচনে তার সুফলও মিলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কুলটি থেকে ‘লিড’ মেলেনি। যা মাথাব্যথার কারণ হয়েছে দলের কাছে।

    অবাঙালি ভোটারদের আস্থা ফিরে পেতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী কুলটিতে সভা করেছেন, অনেকটা বক্তব্য রেখেছেন হিন্দিতে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘আমরা জেতার জন্যই মাঠে নেমেছি। এ বার আমাদের ফল অনেক ভাল হবে।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যে যে ৭২টি সামাজিক প্রকল্প চালু রয়েছে তার সুফল পেয়েছেন এলাকার মানুষ। তা প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে।

    কুলটিতে এ বার শেষ পর্যন্ত কে বাজিমাত করেন, সেই অঙ্কের উপরে অনেকটাই নির্ভর করতে পারে আসানসোল কেন্দ্রের ভোট-ভাগ্য।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)