অতীশ সেন, ডুয়ার্স : দীর্ঘ তের বছর পর দুই দেশের সীমান্তে পিতা-পুত্রের দেখা হল। বাবার সঙ্গে ঝামেলা করে শুধু বাড়ি নয় দেশ ছেড়েছিল ছেলে। ভুটান থেকে ঢুকে পড়েছিল ভারতে, এরপর পাড়ি জমিয়েছিল চেন্নাইতে। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে কাজ জুটিয়ে দিব্বি চলছিল। তবে করোনা অতিমারি সব ওলট-পালট করে দেয়। কাজ হারানোয় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁকে ভবঘুরে অবস্থা থেকে উদ্ধার করে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তাঁদের হাত ধরেই ছেলে আবারও তিনি ফিরলেন ভুটানে। চামুর্চী সীমান্ত পেরিয়ে সামচীতে পা দিতেই ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরল বাবা, তিনি ভেবেই নিয়েছিলেন ছেলে হয় তো আর বেঁচে নেই। ছেলেকে ফিরে পেয়ে তিনি খুবই আনন্দিত।ভুটানের রাজধানী থিম্পুর নিবাসী ফোনসে ওয়াংদি থিম্পুর একটি বেকারিতে বাবার সঙ্গেই কাজ করতেন। তার বাবা নামগে ওয়াংদির সাথে বচসা করে সে ২০১১ সালে ভুটান থেকে পালিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে। পাড়ি জমায় দক্ষিণ ভারতে। চেন্নাইয়ের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ জুটিয়ে সেখানেই বসবাস করা শুরু করে ফোনসে। তবে করোনার সময় লকডাউন চলাকালীন সে কর্মহীন হয়ে পড়ে, এর জেরেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড় ফোনসে। ভবঘুরে অবস্থায় তাকে চেন্নাইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সদস্যরা উদ্ধার করেন, সেখানে ছয় মাস একটি মানসিক হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলে। সেখান থেকে মুম্বাইয়ে "শ্রদ্ধা রিহ্যাবিলিটেশন ফাইন্ডেশন" এর সদস্যরা তাকে মুম্বাইয়ে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসার পর এখন প্রায় সুস্থ ফোনসে। সংগঠনের তরফ থেকে সমর বসাক ও নিখিলেশ সাঙ্গাদা বলেন, "মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় এই যুবককে উদ্ধার করেন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর তাঁরা জানতে পারেন যুবকটির আসল বাড়ি ভুটানের থিম্পুতে। তারপরে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়। সোমবার এদিন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও এসএসবি ১৭ বাটেলিয়ানের সহযোগিতায় ছেলেটিকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।"