‘ছাপ্পা’ ভোটের প্রতিবাদ করায় বিজেপির এজেন্টকে মারধর করার অভিযোগ ঘিরে সোমবার উত্তেজনা ছড়াল তারাপীঠ থানার নিমা পাখুরিয়া গ্রামে। সংঘর্ষ বাধল বিজেপি ও তৃণমূলের। ঘটনায় বিজেপির বুথ এজেন্ট-সহ দু’পক্ষের দু’জন জখম হয়েছেন। দু’জনেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসডিপিও (রামপুরহাট) গোবিন্দ শিকদারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে পৌঁছায়। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরাও গ্রামে যান। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ঘটনায় কেউ আটক বা গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজমিস্ত্রির কাজে মুম্বইয়ে গিয়েছেন হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিমা পাখুরিয়া গ্রামের কয়েক জন যুবক। তাঁরা ভোটের সময় গ্রামে ফিরতে পারেননি। বিজেপির অভিযোগ, ওই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকের ভোট এলাকার তৃণমূল কর্মীরা নাবালকদের দিয়ে দেওয়াচ্ছিলেন। ভোট চলাকালীন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৩৮ নম্বর বুথে থাকা বিজেপি এজেন্ট অসীম মাল প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করে বুথ থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই সংঘর্ষ বাধে। বিজেপির অভিযোগের তির গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা রেজিনা খাতুনের স্বামী রনি শেখের দিকে।
পরে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এলাকায় পৌঁছে অসীমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এলাকায় পৌঁছে যান হাঁসনের বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সাহাপুর অঞ্চল সভাপতি মেহেবুব আলম। তাঁরা দলীয় কর্মীদের শান্ত করেন। নিমা পাখুড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আশিস দে চৌধুরী জানান, বুথের ভিতরে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। বুথের বাইরে গণ্ডগোলের জেরে ভোট প্রক্রিয়ায় কোনও অসুবিধা হয়নি।
এ দিন এলাকায় পৌঁছে দেখা গেল, গ্রামের শেষ প্রান্তে ওই বুথে যাওয়ার রাস্তার মোড়ে মোড়ে তৃণমূল কর্মীদের জটলা। মালপাড়ার মহিলারা তৃণমূল কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তারাপীঠ থানার পুলিশ উভয় পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। মহিলাদের অভিযোগ, ভোটার না হয়েও অন্যদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ায় তাঁদের পাড়ার ছেলে অসীম মালকে রাস্তায় ফেলে তৃণমূল কর্মীরা মারধর করেছেন। অসীম বলেন, ‘‘গ্রামের কিছু যুবক মুম্বইয়ে আছেন। তাঁরা গ্রামে ফেরেননি। অথচ ওঁদের ভোট নাবালকদের দিয়ে দেওয়াচ্ছিল তৃণমূল।’’ তাঁর দাবি, তিনি ছাপ্পা ভোটের প্রতিবাদ করতেই রনি শেখ তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বুথ থেকে মারধর করে বের করে দেন। বুথ থেকে বেরোতেই আরো বিশ পঁচিশ জন তৃণমূল কর্মী আমাকে তাড়া করে মারতে আসে। ওদের তাড়ায় আমি রাস্তায় পড়ে যায়। তখন ওরা আমাকে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।
দিও রনির দাবি, ‘‘বিজেপির এই গ্রামে ভোট নেই। ওরা সেই কারণে জটলা পাকিয়ে বুথের ভিতরে আমাদের এক জন নতুন ভোটারকে ভোটদানে বাধা দেয়। ওদের বুথ এজেন্টকে কেউই মারধর করেনি। পড়ে গিয়ে উনি জখম হয়েছেন।’’ তৃণমূল কর্মী সতন মালকে বাড়িতে ঢুকে বিজেপি মারধর করেছে বলেও রনির অভিযোগ।