• প্রৌঢ়ের দুই অঙ্গ পাচ্ছেন আঠারোর তরুণ
    আনন্দবাজার | ১৪ মে ২০২৪
  • আঠারো বছরের এক তরুণের শরীরে একই সঙ্গে ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করা হল। এ রাজ্যে মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে এই প্রথম দাতার দু’টি অঙ্গ গ্রহীতা একযোগে পাচ্ছেন বলে দাবি চিকিৎসকদের।

    এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন, ৫২ বছরের প্রৌঢ়ের ব্রেন ডেথের পরে তাঁর দু’টি অঙ্গের মাধ্যমে ওই তরুণকে নতুন জীবন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি, প্রৌঢ়ের একটি কিডনি পাচ্ছেন পিজিতে চিকিৎসাধীন ২৮ বছরের তরুণী ও আলিপুর সেনা হাসপাতালে ভর্তি ৩২ বছরের এক তরুণী। যকৃৎ পাচ্ছেন পিজিতেই ভর্তি ৫১ বছরের প্রৌঢ়া।

    জানা যাচ্ছে, ব্রেন ডেথ হওয়া অরুণ কুলে পেশায় চাষি। ফলতার বাসিন্দা প্রৌঢ় ১০ মে পরিজনদের সঙ্গে বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন। বিষ্ণুপুরে ওই বিয়েবাড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পেরোচ্ছিলেন অরুণ। তাঁর জামাই সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘তখন একটি স্কুটার ওঁকে ধাক্কা মারে।’’ প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে, পরে সেখান থেকে অরুণকে স্থানান্তরিত করা হয় এম আর বাঙুরে। সেখানে সিটি স্ক্যানের পরে তাঁকে পাঠানো হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে। কিন্তু পরে অবস্থা খারাপ হওয়ায় অরুণকে নিয়ে আসা হয় পিজির ট্রমা কেয়ারে।

    হাসপাতাল সূত্রের খবর, ১১ মে প্রৌঢ়ের মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। রবিবার রাতে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, প্রৌঢ়ের ব্রেন ডেথ হচ্ছে। সোমবার সকালে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। সত্যজিৎ বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা অঙ্গদানের বিষয়ে বুঝিয়ে বলার পরে আমরা সম্মতি দিই।’’ সূত্রের খবর, রাতে বছর আঠারোর ওই তরুণের শরীরে ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন শুরু হয়েছে। যা শেষ হতে আজ, মঙ্গলবার সকাল হয়ে যাবে। ওই তরুণের জন্ম থেকে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা আছে। তাই, ফুসফুসেও সমস্যা ছিল। সেখানে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছিল।

    স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, ১৯৯৪ সালে কেন্দ্রে প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত আইন পাশ হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস একসঙ্গে এক জনের শরীরে প্রতিস্থাপনের সংখ্যা ১০০-র কিছু বেশি। তবে সেগুলি সবই হয়েছে দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম ভারতে। পূর্ব ভারতেএই প্রথম ‘এনব্লক হার্ট-লাং ট্রান্সপ্লান্ট’ হচ্ছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)