রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগ: অনুসন্ধানের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ল নগরপালের কাছে
আনন্দবাজার | ১৪ মে ২০২৪
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ল কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কাছে। যদিও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই রিপোর্ট তৈরি করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। গত শনিবার ওই রিপোর্ট কলকাতার নগরপালের কাছে জমা পড়েছে বলেই খবর।
গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জানান তিনি। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশি তদন্ত নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাজ্যপাল। রাজভবনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের তদন্ত করতেই পারে না পুলিশ। সেই এক্তিয়ার তাদের নেই। একই সঙ্গে সংবিধানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজভবনের কর্মীদের এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোথাও মুখ খুলতে নিষেধ করেছিলেন রাজ্যপাল স্বয়ং। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ রাজভবনের বেশ কয়েক জন কর্মীকে তলব করেছিল। কিন্তু সূত্রের খবর, কেউই হাজিরা দেননি। ফলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক রিপোর্টে রাজভবনের কর্মীদের বয়ান নেই। ভবিষ্যতে কোনও বয়ান মিললে তা রিপোর্টে যোগ করা হবে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ রাজ্যের পূর্ত দফতরের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তারাই রাজভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে ওই দিনের ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছিল। পুলিশ তা খতিয়ে দেখেছে। অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে ফুটেজের কিছু অংশ মিলেও গিয়েছে বলে খবর ছিল। সব মিলিয়ে রিপোর্ট জমা দিল পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্ট নবান্নের কাছে জমা দেওয়া হতে পারে।
শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে ওঠে। রাজ্যপালকে লাগাতার আক্রমণ করে যাচ্ছেন শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা। রাজ্যপাল অবশ্য প্রথম থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘অশুভ’ উদ্দেশ্যেই এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে। কিন্তু আক্রমণ থামেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় প্রতিটি জনসভা থেকেই রাজ্যপালকে নিশানা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উচিত রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়া, এমন কথাও মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে।