• রেশন নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট পেশ, ইডিকে ১৭ জুনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বললো হাইকোর্ট
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৪ মে ২০২৪
  • মোল্লা জসিমউদ্দিন:  সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ওঠে রেশন সংক্রান্ত মামলা৷ রাজ্যে রেশন দুর্নীতিতে এখনও পর্যন্ত ৮৭টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ এদিন রিপোর্ট দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জানালো রাজ্য৷ এর মধ্যে ৬৫টি মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে রাজ্য৷ ২টি মামলায় ত্রুটি আছে৷ বাকি ২০টি মামলার তদন্ত চলছে বলে ওই রিপোর্টে জানিয়েছে রাজ্য৷ রাজ্যের এই রিপোর্ট নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে চায় ইডি৷ আগামী ১৭ জুনের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি কে তাদের অবস্থান জানাতে হবে৷ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬টি মামলার তদন্তে স্থগিত থাকবে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত৷ গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷ এদিকে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডির হাতে উঠে এসেছে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, ?১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে৷ সেই দুর্নীতির টাকা পাঠানো হয়েছে বিদেশে?৷
    দুর্নীতির তদন্ত যথাযথ হয়নি৷ উল্টে মূল এফআইআর রাজ্য পুলিশ নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের৷ এবার রাজ্যে রেশন কার্ড কত? খাদ্য দফতরের থেকে জানতে চাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ খাদ্য দফতরের কাছে ইডির প্রশ্ন, রাজ্যে চালু রেশন কার্ড কতগুলি রয়েছে অর্থাৎ যে সমস্ত রেশন কার্ডে নিয়মিত রেশন তোলা হয়, তার সংখ্যা কত? রাজ্যে ২০১৯ সালের আগে কত রেশন কার্ড ছিল এবং এখন কত হয়েছে? রেশন কার্ড ডিজিটালাইজড হওয়ার সময় কত রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে? এইসব জানতে চেয়েছে ইডি৷
    বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ১৭ জুন ইডিকে ওই রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এছাড়াও রাজ্যের হাতে থাকা অন্তত ৬টি মামলার তদন্ত ২৪ জুন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে হাইকোর্টের তরফে৷ গাইঘাটা থানার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের সব রেশন দুর্নীতির মামলা ইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷ তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যের কোন কোন থানায় রেশন দুর্নীতি নিয়ে কটি এফআইআর দায়ের রয়েছে, তা আদালতে জমা দেওয়ার আবেদন করে ইডি৷ ইডির সেই দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে রিপোর্ট পেশ করা হয়৷ হাইকোর্ট এর আগে রেশন দুর্নীতির ছটি মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল৷ আদালত জানিয়েছিল, এই ছটি মামলায় তদন্ত করতে পারবে না রাজ্যের পুলিশ৷ এদিন আদালতের তরফে সেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে৷ ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যের পেশ করা রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷ ২০১৯-এ বালিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা শুরু৷ গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে আদালত বলে, পুলিশ যদি সেই মামলার তদন্ত চালিয়ে যায়, তাহলে তা আপাতত বন্ধ রাখতে হবে৷ রেশন দুর্নীতির ছটি মামলার তদন্তে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আদালতে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি৷ তারা বলেছিল, তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে ছটি এফআইআরের ক্ষেত্রে রাজ্যের পুলিশ কোনও পদক্ষেপই নেয়নি৷ তথ্যপ্রমাণ হাতে থাকার পরেও তদন্ত বন্ধ করে রাখে পুলিশ৷ এমন কী এইসব মামলায় যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিজিপিকে চিঠি দেওয়া হলেও, তার কোনও জবাব আসেনি বলেও আদানতে জানিয়েছিল ইডি৷
    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে ইডি৷ তারপর এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে মন্ত্রীপদ থেকে অপসারণ করা হয়৷ এছাড়াও রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় বাকিবুর রহমান এবং বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে৷ পরবর্তীতে গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান এর বাড়িতে ইডির অভিযান ছিল এই রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতির সুত্র ধরেই৷
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)