গত লোকসভার চেয়ে দুই শতাংশ কম ভোট কম পড়েছে জেলায়। বিধানসভার চেয়েও ভোট কম পড়েছে তিন শতাংশের কাছাকাছি। আবার ২০১৪ সালের চেয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও দুই শতাংশ ভোট কম পড়েছিল পূর্ব বর্ধমানে। লোকসভায় কম ভোট পড়ার এই প্রবণতা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে সব রাজনৈতিক দলেরই দাবি, এ বার ভোট শান্তিপূর্ণ। বুথ দখল বা ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগও সে ভাবে ওঠেনি। জেতার ব্যাপারেও আশাবাদী সব পক্ষ।
জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে জেলায় ভোট পড়েছিল ৮৪.৭৬%। আর ২০২১ সালের বিধানসভায় ভোট পড়েছিল ৮৫.৭৩%। সোমবার জেলার ১৫টি (খণ্ডঘোষের ভোট ২৫ মে ) বিধানসভায় ভোট পড়েছে ৮২.৭৬ শতাংশ। বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র ছাড়া বোলপুর লোকসভার তিনটে বিধানসভায় (কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট) ২০১৯ সালের লোকসভায় ৮৫.০৮%, বিধানসভায় ৮৫.৬৩% ভোট পড়েছিল। এ বার সেখানেও প্রায় তিন শতাংশ ভোট কম পড়েছে (৮২.৩২%)।
বর্ধমান পূর্ব ও বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বিধানসভাগুলির ভোটদানের হার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, বর্ধমান পূর্ব লোকসভায় সব বিধানসভাতেই ৮০%য়ের বেশি ভোট পড়েছে। ওই লোকসভার ভিতরে থাকা জামালপুর ও রায়নায় বেশি ভোট পড়েছে। তুলনায় কম ভোট পড়েছে কাটোয়া ও পূর্বস্থলী দক্ষিণে। আবার বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে বর্ধমান উত্তর ও গলসিতে। ৮০ শতাংশের নীচে ভোট পড়েছে বর্ধমান দক্ষিণ, দুর্গাপুর পশ্চিম ও দুর্গাপুর পূর্বে।
ভোটের দিন গোটা জেলা থেকে প্রায় ৪৫০টির মতো অভিযোগ জমা পড়েছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে। তার মধ্যে বিজেপি একাই করেছে আড়াইশোটির মতো অভিযোগ। তৃণমূলও বেশ কয়েকটি বুথে বাহিনীর বাড়াবাড়ির অভিযোগ করেছিল। তবে ভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার পরে সব রাজনৈতিক দলই শান্তিতে ভোট মিটেছে বলে জানিয়েছে। বিরোধীদেরও দাবি, জল কম পড়েছে বলে ভোট এ বার ঘন হয়েছে।
বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেন, “সবাই বলছে ভোট কম পড়েছে। এ বার জল মেশাতে পারেনি। ব্যাপক ভোট হয়েছে। দু’একটি ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিতে হয়েছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “গত কয়েকটি ভোটের তুলনায় ছাপ্পা কম হয়েছে। সে জন্যই ভোট শতাংশ কম দেখাচ্ছে। তবে রাজ্য প্রশাসন আরও ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণ করলে ভাল হত।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “প্রচণ্ড গরমে কিছু মানুষ ভোটের লাইনে দাঁড়াননি। বিজেপির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েও তাদের কিছু ভোটার ভোট দেননি বলে মনে হয়। সেই কারণেই ভোট শতাংশ কিছুটা কম দেখাচ্ছে। তবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে।’’