জুন মালিয়ার সমর্থনে সভা। তবে সেখানে জুনের প্রতিপক্ষ মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থীর তুলনায় প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষকেই বেশি নিশানা করলেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিমুখ সেই দিলীপের কেন্দ্র বদল।
মঙ্গলবার দাঁতন বিধানসভার খণ্ডরুই রাজবাড়ি ময়দানের সভা করেন অভিষেক। সেখানে তাঁর দাবি, দিলীপকে হারানোর সুযোগ এ বার হাতছাড়া হয়েছে দাঁতন তথা মেদিনীপুরের মানুষের। কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ সেই সুযোগ পেয়েছেন। ‘ভোটারদের অভিনন্দন’ জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘যে সুযোগটা আপনাদের হাতছাড়া হয়েছে। আপনাদের বদলা ততখানি বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ নিয়ে নিয়েছে। এখানকার যিনি প্রার্থী ছিলেন মেদিনীপুর থেকে দাঁড়ালে প্রায় দু’লক্ষ ভোটে হারতেন। তাঁকে গতকাল বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ জবাব দিয়ে দিয়েছে। ভোট বাক্স খুললে পরাজয় সময়ের অপেক্ষা।’’ পাঁচবছরে দিলীপ শুধু আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার ছাড়া কোনও উন্নয়ন করেননি বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
পরে অভিষেক নিশানা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালকেও। তিনি বলেন, ‘‘যারা দু’হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলার ১০ কোটি মানুষের সম্মান নষ্ট করেছে, দেশের মানুষের কাছে ছোট করেছে, সেই অগ্নিমিত্রা পালকে আপনারা ২৫ (ভোটের দিন) তারিখ উচিত শিক্ষা দেবেন।’’ অডিয়ো ক্লিপ শুনিয়ে শুভেন্দুর ‘কুকথা’র সমালোচনাও কেন অভিষেক। মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ দিলীপ পাল্টা বলছেন, ‘‘তৃণমূল দিলীপ ঘোষের ভূত দেখছে। আমি মেদিনীপুরে প্রার্থী হলে এ বার ওখানে দেড় লক্ষ ভোটে তৃণমূলকে হারাতাম। আমাদের দলে কোনও ব্যক্তি প্রার্থী হয় না। অগ্নিমিত্রা পাল আমাদের দলের প্রার্থী। ওর জন্য মেদিনীপুরে দলের সকলে লড়ছেন। আমিও তো যাব। আরও বেশি ভোটে মেদিনীপুরে তৃণমূলকে হারাব।’’
বিজেপি প্রার্থী ভোট চাইতে এলে সন্দেশখালির ঘটনার সত্যতা ও লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে মানুষকে প্রশ্ন করতে বলেছেন অভিষেক। ভোটের আগে বিজেপি এলাকায় টাকা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এই গরমে দফায় দফায় ভোট নিয়ে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুলেছেন অভিষেক। তাঁর দাবি, এক দফা কিংবা দু’দফায় ভোট চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু মানুষকে কষ্ট দিতে ও শুধু বিজেপি নেতাদের সুবিধার জন্য সাত দফায় ভোট হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, আগের দফাগুলিতে বিজেপির মাথা, কোমর, হাত-পা ভেঙে গিয়েছে। ষষ্ঠ দফায় মেদিনীপুরের ভোটে গণতান্ত্রিক উপায়ে বিরোধীদের হাত ও কনুই ভাঙার নিদানও দেন তৃণমূলের এই শীর্ষ নেতা। অভিষেকের কথায়, ‘‘বিজেপি আপনাদের পাঁচবছর ধরে ঠকিয়েছে। আপনারা একদিনে জবাব দেবেন।’’
অভিষেক এ দিন ছুঁয়ে গিয়েছেন মেদিনীপুরের আবেগও। সভার ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত অভিষেক তিনি বলেন, ‘‘আমি যতদিন বাঁচব, এই মাটির কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য মেদিনীপুরের ভূমিকা মনে করিয়েছেন তাঁর ভাইপো।দাঁতন বিধানসভা এলাকায় ৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। অভিষেক বলেন, ‘‘কয়েকটা জায়গায় রাস্তার সমস্যা রয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা করে দেব। আমাদের সরকার করবে।কারও কাছে হাত পাতব না। ভোটের পরে একুশে জুলাইয়ের আগে তিন ফের আসবেন বলেও কথা দিয়ে গিয়েছেন।