• নামবে মমতার কপ্টার, মাঠ দিল না কলেজ
    আনন্দবাজার | ১৫ মে ২০২৪
  • রাত পোহালেই নির্বাচনী প্রচারে কাঁথিতে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাস এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার জন্য নিজেদের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিলেন না কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজ কর্তৃপক্ষ। উল্লেখযোগ্য ভাবে এই কলেজের পরিচালন কমিটির মাথায় আবার রয়েছেন রাজ্যের কারা মন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র তথা কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি!

    খোদ শাসকদলের মন্ত্রীর পুত্র যে কলেজের প্রধান কর্তা, সেই কলেজ কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের জন্য নিজেদের মাঠ ব্যবহার করতে না দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে। ভোটের মুখে এই ঘটনায় অনেকেই তৃণমূলের অন্দরে তীব্র গোষ্ঠীকোন্দলের গন্ধ পাচ্ছেন।

    সুপ্রকাশের সংক্ষিপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়ায় সন্দেহ আরও গাঢ় হয়েছে। ‘‘এটা আমাদের দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না,’’—বলে কার্যত এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। যদিও দলে কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পীযূষ কান্তি পন্ডা বলছেন," বিজেপি অপপ্রচার করছে। দলের নেত্রীর জন্য হেলিপ্যাড এবং পদযাত্রার রুট— সব কিছুই ঠিক হয়ে গিয়েছে। তবে প্রভাত কুমার কলেজের ঠিক কী ঘটেছে, তা প্রশাসনের কাছ থেকে খোঁজ নিচ্ছি।"

    ১৬ মে বৃহস্পতিবার কাঁথিতে পদযাত্রা করবেন মমতা। চন্ডীপুরে তাঁর সভা বাতিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথমে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে হলদিয়ায় সভা করার পর কাঁথি শহরে উত্তম বারিকের সমর্থনে পদযাত্রা করার কথা মমতার। কলকাতা থেকে আকাশ পথে তিনি আসবেন।

    প্রভাত কুমার কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের মাঠে হেলিপ্যাডের অনুমতি না দিলেও স্থানীয় অরবিন্দ স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ, কাঁথি মহকুমা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং দেশপ্রাণ কলেজ কর্তৃপক্ষ 'নো অবজেকশন' শংসাপত্র দিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভাবে অরবিন্দ স্টেডিয়াম এবং স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠকে হেলিপ্যাডের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান এসডিপিও দিবাকর দাস। তাতে অবশ্য বিতর্ক চাপা দেওয়া যাচ্ছে না।

    প্রভাতকুমার কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি শেখ ইমরানের কথায়, ‘‘অধ্যক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিল। তিনি জানান, মহকুমাশাসক ইতিমধ্যে কলেজকে নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের করছেন। যদিও মহকুমাশাসক ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, হেলিপ্যাডের অনুমোদন দিলে সমস্যা নেই, তবু কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র দেননি।’’

    কলেজের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দে-র কথায়, ‘‘গত ১ মে আমাদের অঙ্গীকার করতে হয়েছে যে, নির্বাচন না মেটা পর্যন্ত কলেজের সম্পত্তি কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেওয়া যাবে না। ২ মে থেকে মহকুমাশাসকের মাধ্যমে কলেজের সমস্ত সম্পত্তি নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অবস্থায় আমি কী করে হেলিপ্যাডের অনুমতি দিতে পারি! বিষয়টি কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি নজরে আনা হয়েছে।’’ এর পাল্টা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের ইউনিট নেতা ইমরান প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কমিশন যদি কলেজের সমস্ত সম্পত্তি ব্যবহারের জন্য নিয়ে থাকে, তা হলে কলেজে বিজেপি প্রার্থীর প্রচারের গাড়ি কেন দিনের পর দিন রাখা হচ্ছে?" এর উত্তর মেলেনি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)