বিধান সরকার: গত ১৭ মার্চ হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন বছর চল্লিশের রীতা দাস। ব্যান্ডেল কেওটায় তার বাড়ি। নিকট আত্মীয় বলতে দিদি রীনা দাসের পরিবার। রীনার ছেলে বিকাশ চুঁচুড়া ব্রাঞ্চ স্কুলের শিক্ষিকা শুভ্রা ভট্টাচার্যের ছাত্র। ছাত্রের কাছে শুভ্রা জানতে পারেন তার মাসি হারিয়ে গেছেন। শুরু হয় খোঁজ।
এদিকে এর মধ্যে রাজস্থানের ঝুনঝুন থেকে একটি ফোন আসে রীতার দিদির কাছে। সেই সূত্র ধরে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় রাজস্থানের এক আশ্রমে রয়েছেন রীতা দাস। কিন্তু তাকে উদ্ধারের উপায় কী? শুভ্রা হুগলি জেলা প্রশাসনের দরজায় কড়া নাড়তে থাকেন। নির্বাচনের কাজে সবাই ব্যাস্ত থাকায় কোনো পথ বের হয় না।এদিকে পুলিস কর্মী সুকুমার উপাধ্যায় এধরনের কাজে এগিয়ে আসেন সব সময়। তিনিও চেষ্টা করতে থাকেন তার মত করে। শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়নে চুঁচুড়ায় অতিরিক্ত জেলা শাসকের দপ্তরে আসেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। সেখানে ডিউটি করছিলেন সুকুমার। ভজনলালের নিরাপত্তা রক্ষীদের বিষয়টি জানিয়ে সাহায্য চান সুকুমার। এরপরই ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রীর পিএ।এদিকে শিক্ষিকা জেলা শাসক থেকে ওয়েলফেয়ার অফিসার সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু মহিলাকে ফিরিয়ে আনতে বাধ সাথে নির্বাচনের ব্যস্ততা। অবশেষে চন্দননগর পুলিস কমিশনার অমিত পি জাভালগির সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান শিক্ষিকা। কমিশনার আশ্বাস দেন এবং চুঁচুড়া থানার আইসিকে নির্দেশ দেন পুলিস টিম পাঠাতে। আইসি রামেশ্বর ওঝা দুজন মহিলা পুলিশ কর্মী ও একজন কনস্টেবলকে রাজস্থানে পাঠান গত দশ তারিখ। আজ সকালে মহিলাকে নিয়ে তারা ফিরে আসেন চুঁচুড়ায়। রাজস্থানে গিয়ে পুলিশের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য লিলুয়ার এক স্বেচ্ছাসেবি সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সকলের প্রচেষ্টায় হারিয়ে যাওয়া মহিলাকে তার বাড়ি ফিরে আসেন। মহিলার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা আছে। তবে অনেক কিছু মনে রাখতে পারেন তিনি। তার ঠিকমত চিকিৎসা হলে হয়ত সুস্থ হয়ে উঠবেন।