• কুড়মিরা সঙ্গেই, দাবি শুভেন্দুর
    আনন্দবাজার | ১৭ মে ২০২৪
  • ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে কুড়মি ভোট মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের। কারণ, এই আসনে কুড়মি সমর্থিত দু’জন প্রার্থী রয়েছেন। এই দু’ই প্রার্থী ভোট কাটলে আখেরে সুবিধা পাবে তৃণমূল। তাই এই আবহে কুড়মি ভোট টানতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিলদায় বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুর সমর্থনে প্রচারে এসে সংকল্প সভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘‘কুড়মি সমাজের অনেক নেতা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কুড়মি সমাজ ওদের সঙ্গে নেই। কুড়মিরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’’

    ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের নির্দল প্রার্থী বরুণ মাহাতো। আবার আদিবাসী কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সূর্য সিং বেশরা। ভোটের ময়দান থেকে সরে এসেছেন রাজেশ মাহাতো নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজ। গেরুয়া শিবিরের দাবি, এই দুই নির্দল প্রার্থী তৃণমূলের ইন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। এ দিন শিলদার সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘ভোট কেটে তৃণমূলকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই দু’টি কুড়মি সংগঠন দু’জন নির্দল প্রার্থী খাড়া করছে। আবার সূর্য সিং বেসরা বলেছেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। গরুর গাড়ির হেডলাইট যে দিন লাগবে। সে দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’ গত পঞ্চায়েত ভোটে কুড়মি ভোট ভাগ হওয়ার কারণে কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত কুড়মিরা দখল করেছিল। এতে আখেরে সুবিধা পেয়েছিল তৃণমূল। তাই কুড়মি ভোটকে নিজেদের কাছে টানতে মরিয়া শুভেন্দু বলেন, ‘‘কুড়মি সমাজ ওদের (তৃণমূলের) সঙ্গে নেই। আমার সঙ্গে নেতাদের কথা হয়েছে। ভাইপো পুলিশকে দিয়ে কুড়মি নেতাদের জেল খাটিয়েছে। রাজেশ মাহাতো-সহ কুড়মি আন্দোলনের আসল নেতাদের উপর যখন অত্যাচার হয়েছে। সে দিন তৃণমূলের কোনও নেতা আসেননি। এই বিরোধী দলনেতা লোধাশুলি, নেদাবহড়াতে বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়েছে।’’ আদিবাসী কুড়মি সমাজ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সূর্য সিং বেসরা বলেন, ‘‘আমি দালালি করি না। কারও হুমকি-ধমকি সহ্য করি না। তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে আমার লড়াই। কুড়মি ও আদিবাসীদের ভোটেই আমি জিতব।’’ পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের মুখপাত্র কৌশিক মাহাতো বলেন, ‘‘কোন নেতা যোগাযোগ রেখেছে তা তো জানা নেই। কুড়মি সমাজ অনেক বড়। উনি সংগঠনের কথা বলেননি। নির্বাচনে আমরা নিষ্ক্রিয় থাকব এটাই আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত।’’

    এ দিন শুভেন্দু বারে বারেই বক্তব্য দিতে বলেছেন, জঙ্গলমহলে তৃণমূলকে তিনি এনেছেন। শুভেন্দু জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা কি পচা পুকুরে ডুববেন? তৃণমূল ছেঁদো পুকুর। কালীপদবাবু, জিতে আপনি কী করবেন? সংসদে গিয়ে কি হাত-পা নাড়বেন। কালীপদবাবুকে জিজ্ঞাসা করবেন আপনার প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? পিসি কোনওদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না।’’

    শিলদা এলাকার জলের সমস্যা এ দিন উস্কে দিয়েছেন শুভেন্দু। গরম পড়লেই শিলদায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেয়। বছর খানেক আগে শিলদায় কুড়চিবনিতে জলের সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন স্থানীয় মহিলারা। শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনাদের বাড়ি বাড়ি জল এসেছে? এই সরকার কেন্দ্রের ৮ হাজার কোটি টাকা খেয়েছে। তবুও জল পাচ্ছেন না। পাশের ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় যান। সেখানে বাড়ি বাড়ি সকলে জল পাচ্ছেন। শুভেন্দু এ দিন শিলদায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের বহু লোক আমাদের হয়ে কাজ করছে। আমাকে ফোন করছে। ৪ তারিখের পর তাঁদের নাম প্রকাশ করব।’’ এ ব্যাপারে জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ঝাড়গ্রাম জেলার ক্ষেত্রে এটা হাস্যকর। শিলদায় লোক না হওয়ায় মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’ পরে এ দিন রাতে প্রার্থীকে নিয়ে রোড শো করেন শুভেন্দু।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)