• মশলায় 'বিষ', MDH ও এভারেস্ট ব্যান করল নেপালও
    আজ তক | ১৭ মে ২০২৪
  • সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ের পরে, এখন নেপালও দুটি ভারতীয় মশলা ব্র্যান্ড এভারেস্ট এবং MDH-এর বিক্রয়, ব্যবহার এবং আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এসব মশলায় কীটনাশক ইথিলিন অক্সাইড থাকতে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যেই নেপালের খাদ্য প্রযুক্তি ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব মশলায় ইথিলিন অক্সাইডের তদন্ত শুরু হয়েছে।

    নেপালের খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের মুখপাত্র মোহন কৃষ্ণ মহারাজান বলেন, এভারেস্ট ও এমডিএইচ ব্র্যান্ডের মশলা আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা এসব মশলা বাজারে বিক্রিও নিষিদ্ধ করেছি। এসব মশলায় ক্ষতিকর রাসায়নিক রয়েছে এমন খবর পেয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই দুই ব্র্যান্ডের মশলায় বিপজ্জনক রাসায়নিকের তদন্ত চলছে। তদন্তের রিপোর্ট  না আসা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে।

    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে MDH এবং এভারেস্টের নাম কয়েক দশক ধরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ব্র্যান্ডের মশলা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে রফতানি হয়। ব্রিটেন, নিউজিল্যান্ড, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াতেও এমডিএইচ এবং এভারেস্টের মশলার তদন্ত শুরু হতে পারে।

    কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে, ব্রিটেনের ফুড সেফটি এজেন্সি (FSA) বলেছে যে ভারত থেকে আসা সমস্ত মশলার উপর বিষাক্ত কীটনাশকের পরীক্ষা কঠোর করা হয়েছে, যার মধ্যে ইথিলিন অক্সাইডও রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের ফুড সেফটি রেগুলেটরি ডিপার্টমেন্টের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জেনি বিশপ বলেন, ইথিলিন অক্সাইড একটি রাসায়নিক, যার থেকে  মানুষের ক্যান্সার হতে পারে। MDH এবং এভারেস্টের মশলাও নিউজিল্যান্ডের বাজারে বিক্রি হয়। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।

    সিঙ্গাপুর ও হংকংও নিষিদ্ধ করেছে
    হংকংয়ের পর সিঙ্গাপুরের ফুড এজেন্সি (SFA)ও আপাতত এভারেস্টের ফিশ কারি মশলা নিষিদ্ধ করেছিল। এভারেস্টের ফিশ কারি মসলার অর্ডার ফিরিয়ে দিয়েছে সিঙ্গাপুর। ফিশ কারি মশলায়  ইথিলিন অক্সাইডের পরিমাণ নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি বলে দাবি করা হয়। সংস্থাটি বলেছে যে বর্তমানে অল্প পরিমাণে ইথিলিন অক্সাইড থেকে কোনও বিপদ নেই, তবে দীর্ঘমেয়াদী সেবন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

    এই ইথিলিন অক্সাইড কী?
    ইথিলিন অক্সাইড একটি বর্ণহীন গ্যাস। ঘরের তাপমাত্রায় রাখলে এটি একটি মিষ্টি গন্ধ দেয়। ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের (NCI)-এর মতে, এই গ্যাস ইথিলিন গ্লাইকল (অ্যান্টি-ফ্রিজ) এর মতো রাসায়নিক তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, এটি টেক্সটাইল, ডিটারজেন্ট, ফোম, ওষুধ এবং দ্রাবক তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এটি E. coli এবং Salmonella এর মত জীবাণু দূষণ প্রতিরোধ করতে খাদ্য মশলায় অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। এটি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম পরিষ্কার করতেও হাসপাতালেও ব্যবহৃত হয়।

    এটা কতটা বিপজ্জনক?
    ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (IARC) ইথিলিন অক্সাইডকে 'গ্রুপ-১ কার্সিনোজেন' ক্যাটাগরিতে রেখেছে। এর মানে হল যে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে এটি মানুষের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। যারা ক্রমাগত এই রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসে বা সেবন করে তাদের চোখ, ত্বক, নাক, গলা এবং ফুসফুসে জ্বালা হতে পারে। এটি মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) অনুসারে, ইথিলিন অক্সাইডের সংস্পর্শে মহিলাদের মধ্যে লিম্ফয়েড ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে , মাঝে মাঝে বা খুব কম পরিমাণে এর ব্যবহার বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় না। তাই এটি মশলায় ব্যবহার করা হয়। মশলা ছাড়াও এটি অন্যান্য অনেক খাবারে ব্যবহৃত হয়।
  • Link to this news (আজ তক)