'পলিটিক্স করে সর্বনাশ করছেন', রামকৃষ্ণ মিশন-ভারত সেবাশ্রমের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ মমতার
২৪ ঘন্টা | ১৯ মে ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পুরনো দিনের কথা তুলে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও রামকৃষ্ণ মিশনের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিলেন মমতা। শনিবার গোঘাটের সভা থেকে মমতা বলেন, গোঘাটে আগে মানুষ বের হতে পারতো না। নাপিত বয়কট করা হতো, হাত কেটে দেওয়া হতো, পা কেটে দেওয়া হতো, জমি দখল করে নেওয়া হতো। একবার চমকাইতলায় পার্টির মিটিংয়ে এসেছিলাম। সঙ্গে ছিলেন অজিত পাঁজা। আমাদের মাইক প্য়ান্ডেল ভেঙ্গে দেওয়া হল। চারদিকে গুলি চলছিল। সেদিন আমাদের থাকার জায়গা ছিলা না। জয়রামবাটিতে মিউনিশিপ্যালিটির গেস্ট হাউসে ছিলাম। জয়রামবাটির কথা বলছি কারণ দেখলাম এখানে গোপীনাথপুর সিহড়ে হাজার দশেক লোক জমায়েত হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। রাতে দুটোর সময় খবর এলে ওই গ্রামটে সিপিএম দখল করে নিয়েছে। রাত একটায় বের হলাম। পুকুরে লুকিয়ে রয়েছে মানুষ। চার দিকে মাংস রান্না হচ্ছে, আর মদের ফোয়ারা উঠেছে। ওরা সিপিএমের হার্মাদ। তারা এখন বিজেপিতে।
মমতা বলেন, আমি মানুষের স্বার্থেরকথা বলতে চাই। পরের দিন এখানে এলাম। দেখলাম যারা ঘরছাড়া তারা জয়রামবাটি, কামারপকুরে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের সেখানে খাবারদাবার দেওয়া হচ্ছে। আমি তাদের মনে করব না তো কাদের মনে করব। সেই জন্য বারবার করে আমি অনেক শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে বলছি ওঁরা অনেক মানুষের কাজ করেন। হ্যাঁ, কেউ কেউ করে না। সব সাধু তো সমান হয় না। সব সজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরে একজন মহরাজ আছেন, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘের তালিকায় তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। কারণ তিনি ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি আইডেন্টিফাই করেছি কে কে করেছেন।গোঘাটের সভা মমতা আরও বলেন, আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণ মিশন আছে। রামকৃষ্ণ মিশনকে আমি কী হেল্প করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে স্বাধিকার নিয়ে আমি কিন্তু পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম। সিপিএম আপনাদের কাজ পর্যন্ত করতে দিত না। ইস্কনেও ৭০০ একর জমি দিয়েছি ইস্কন শহর করবার জন্য। ইস্কনেরও একটি মন্দির আছে, মিশন আছে। এরকম একটা দুটো তো থাকবেই। দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে, বলে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলো। কেন করবে সাধু সন্তরা একাজ? রামকৃষ্ণ মিশনকে সাবই শ্রদ্ধা করে। ওদের কাছে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। তাদের আমি ভালোবাসতে পারি, দীক্ষা নিতে পারি কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কোনওদিন। এটা আমি জানি। তাহলে আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব? কেউ কেউ ভায়োলেট করছে, সবাই নয়। মনে রাখবেন স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকতো না যদি আপনাদের এই মেয়েটা বেঁচে না থাকত। একদিন হঠাত্ রাতে আমাক ফোন করেন ডা সুব্রত মৈত্র। বলেন, এই দেখো আমাদের বাড়িটা দখল করতে এসেছে। স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি, কল্পনা করতে পারেন? দখল করতে এসেছে কয়েকজন মাফিয়া মিলে। আমি বললাম তাই! এত সাহস! বাড়িটা কার নামে? উনি বললেন বাড়িটা আমাদের নামে নেই। আমি পরের দিন মেয়রকে পাঠিয়ে বললাম যা টাকা লাগবে আমরা রাজ্য সরকার দেব। ওই বাড়ি স্বামী বিবেকানন্দের নামেই থাকবে। আর কারও থাকবে না। অনেকে ভুলে গিয়েছে তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি। সিস্টার নিবেদিতার বাড়ি, জোর করে নিয়ে নিচ্ছিল। আমি নিজে দুবার ছুটে গিয়েছি। মায়ের বাড়িও করে দিয়েছি। কালীঘাটে যান ওখানেও স্কাই ওয়াকের কাজ চলছে। এসব বললাম এই কারণে যে কিছু ঘটনা যা আমার মনে থাকে তা আপনাদের মনে করিয়ে দিই।