সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে শনিবার বিষ্ণুপুরে মহিলাদের উচ্ছ্বাস দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপ্লুত হন। শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত সভাস্থল ভিড়ে ভিড়াক্কার হয়ে যায়। বহু মানুষ স্কুলের পাঁচিলে উঠে মমতার বক্তৃতা শোনেন। আশেপাশের বহু বাড়ির ছাদেও ছিল মানুষের ভিড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোঘাটের সভা সেরে সাড়ে তিনটে নাগাদ বিষ্ণুপুরে পৌঁছলেও দুপুর দু’টোর আগেই সভাস্থল ভরে যায়। ছাউনির বাইরেও কয়েক হাজার মানুষ রোদে দাঁড়িয়েছিলেন মমতাকে দেখার ও তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা চলাকালীন প্রচণ্ড গরমে ওন্দার এক তৃণমূল নেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঞ্চ থেকেই তাঁকে দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দেন। নেত্রীর নির্দেশে মঞ্চ থেকে নেমে সুজাতা নিজেই চলে যান অসুস্থ ওই নেত্রীর কাছে। তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে দেন। সব মিলিয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মহিলাদের আবেগ ও উচ্ছ্বাস দেখে মমতা বেশ খুশি হন। তিনি এবারে বিষ্ণুপুর থেকে বিজেপির গোড়া উপড়ে ফেলার ডাক দেন। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের বাঁকুড়া জেলার পর্যবেক্ষক সমির চক্রবর্তী। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি অনসূয়া রায় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ক’দিন আগেই বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের সমর্থনে পাত্রসায়রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করে গিয়েছেন। তারপর শনিবার তিনি বিষ্ণুপুরে সভা করেন। পরপর সভা হওয়া সত্ত্বেও এদিন হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। সভামঞ্চের কাছেই হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়। ভর্তি দুপুরে গরমে নাজেহাল অবস্থার মধ্যেও তৃণমূল কংগ্রেসের দেওয়া টুপি হাতে নিয়ে কর্মী ও সমর্থকরা হাওয়া করতে থাকেন। কাটায় কাটায় সাড়ে তিনটে নাগাদ মমতার হেলিকপ্টার নামতেই শীতল ঝোড়া হাওয়া সভাস্থলের উপর বয়ে যায়। অনেকেই বলতে থাকেন মমতার ছোঁয়া লাগা শীতেল বাতাস পেয়ে আমরা স্বস্তি পেলাম। কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমরা হাঁফ ছেঁড়ে বাঁচলাম। সভা চলাকালীন গরমকে উপেক্ষা করে মমতার বক্তৃতায় কর্মী ও সমর্থকরা মজে ছিলেন। মমতার বক্তৃতার সুরে ‘বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও’ স্লোগানও দেন। আবার সভা শেষের পরেই হেলিকপ্টার ওড়ার আগের মূহূর্তে আরও একবার ঝোড়ো বাতাস পেয়ে কর্মী ও সমর্থকরা গরমের মধ্যে যেন প্রাণ ফিরে পান।
হাইস্কুলের পাঁচিলে উঠে মমতার বক্তৃতা শুনছিলেন বিষ্ণুপুরের রাধানগর এলাকার বাসিন্দা বাপন ঘোষ। তিনি বলেন, বাড়িতে একজন অসুস্থ হওয়ায় আমার আসতে একটু দেরি হয়েছে। ভিড়ে তিল ধারনের জায়গা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে পাঁচিলের উপর উঠে পড়েছি। এতদূর থেকে এসে মমতাকে নিজের চোখে দেখব না তা হয় না। পাঁচিলে বসেই বক্তৃতা শুনেছি।