লোকসভা নির্বাচনের জন্য করা হয়েছে ‘স্ট্রং রুম’। ১৩ মে ভোট হয়ে যাওয়ার পরে সেখানেই রাখা হয়েছে ইভিএম। তাই তার পাশে থাকা উপ-ডাকঘরে প্রবেশ নিষেধ গ্রাহকদের!
ডাকঘর কিন্তু বন্ধ নেই। নির্দিষ্ট সময়ে খোলা হচ্ছে রানাঘাট কলেজ উপ ডাকঘর। নিয়মিত হাজির হচ্ছেন পোস্টমাস্টার ও অন্য কর্মীরা। কিন্তু খুব প্রয়োজন থাকলেও পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে ডাকঘর পর্যন্ত পৌঁছতে পারছেন না গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের যে আপাতত ওই ডাকঘরে যেতে দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে ডাক বিভাগকেও কিছু জানানো হয়নি। সব মিলিয়ে রানাঘাট কলেজে থাকা উপ-ডাকঘরের গ্রাহকদের হয়রানির একশেষ হচ্ছে।
আপৎকালীন প্রয়োজনে বৃহস্পতিবার ওই উপ-ডাকঘরে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন রানাঘাট শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অনিমা ভট্টাচার্য। বৃদ্ধা বলেন, "গত দু’তিন দিন ধরে এসে ঘুরে যাচ্ছি। বন্ধ ফটকের সামনে পুলিশের পাহারা থাকছে। ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। খুব প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও ডাকঘর থেকে টাকা তুলতে পারছি না। ফটক থেকেই হাঁকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"
রানাঘাট কলেজের দু’টি ভবনের একাধিক ঘরে ‘স্ট্রং রুম’ করা হয়েছে। সেই স্ট্রং রুমের পাশেই নীচতলার একটি ঘরে রয়েছে উপ-ডাকঘরটি। কলেজের মূল ফটক থেকে উপ-ডাকঘর পর্যন্ত যেতে হলে গ্রাহকদের পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় পার করে যেতে হবে। প্রহরারত পুলিশকর্মীদের বক্তব্য, ডাকঘরে যাওয়ার যতই প্রয়োজন থাক, ফটকের ভিতরে ঢুকতে দেওয়ার হুকুম নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন: কলেজে স্ট্রং রুম করা হয়েছে বলে ভোট গণনা পর্যন্ত ডাক বিভাগের পরিষেবা মিলবে না? সে ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? বাধ্য হয়ে ওই ডাকঘরের গ্রাহকদের একাংশ এখন শহরের অন্য এলাকার উপ-ডাকঘরে গিয়ে টাকা জমা বা তোলার কাজ সারছেন। কিন্তু কোনও গ্রাহক যদি আপৎকালীন প্রয়োজনে নিজের সঞ্চিত টাকা নির্দিষ্ট সময়ের আগে তুলতে চান বা যদি কারও ফিক্সড ডিপোজ়িটের মেয়াদ শেষ হয়ে টাকা তোলার নির্দিষ্ট তারিখ এসে যায়, ওই উপ-ডাকঘরই ভরসা। সে ক্ষেত্রে পরিষেবা মিলবে কী ভাবে?
ডাক বিভাগের নদিয়া দক্ষিণ আঞ্চলিক সুপারিন্টেনডেন্ট প্রদত্ত দাস বলেন, "ওই ডাকঘর চালু রয়েছে। তবে গ্রাহকদের কলেজের ভিতরে প্রবেশের বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। গ্রাহকদের পরামর্শ দেব, পার্শ্ববর্তী উপ বা শাখা ডাকঘরগুলিতে যোগাযোগ করতে।" তবে নির্বাচনের কারণে গ্রাহকদের যে রানাঘাট কলেজের ওই উপ-ডাকঘরে ঢুকতে দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে কমিশনের তরফে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন ডাক বিভাগের ওই কর্তা। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, "ওই স্ট্রং রুমেরপাশে যে উপ ডাকঘর রয়েছে, সেই বিষয়টি জানা ছিল না। পুলিশের সঙ্গে কথা বলব যাতে নিরাপত্তার বিষয়টি সামলে গ্রাহকদের উপ-ডাকঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়।"