দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের ভিতরেই চলছে চোলাইয়ের কারবার। সূর্যাস্তের পরে থেকেই গ্রামে ভিড় বাড়ে মাতালদের। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করাই দায় হয়ে উঠছিল গ্রামের মেয়েদের৷ এই অবস্থায় চোলাইয়ের ঠেক ভাঙতে উদ্যোগী হলেন মহিলারাই। শুক্রবার রাতে সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের খোসনাতোড় গ্রামের মহিলারা চোলাই-সহ এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে খবর দেন আবগারি দফতরে। তবে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যেতে সফল হয়৷
আবগারির আধিকারিকেরা গিয়ে দু’টি পাত্রে প্রায় কুড়ি লিটার বেআইনি মদ উদ্ধার করেন। শনিবার সকালে ওই গ্রাম থেকে আবারও বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগ আসে আবিগারি দফতরে৷ গ্রামে গিয়ে আবারও চারটি ৫ লিটার প্যাকেটে মোট ২০ লিটার চোলাই উদ্ধার করেন তাঁরা৷ কারা এই ব্যবসা করত, তা তদন্ত করে দেখছে আবগারি বিভাগ।
খোসনাতোড় গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার চোলাই বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে গ্রামের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনাও৷ গ্রামের মহিলা সমিতির তরফ থেকে একাধিকবার বিক্রেতাদের কারবার বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হলেও কাজ হয়নি। বিক্রেতারাই উল্টে তাঁদের নানা রকম হুমকি দিতেন বলেও দাবি মহিলাদের। গ্রামবাসী মায়া মাল, লতিকা মাল বলেন, “প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই গ্রাম জুড়ে মদের ঠেক বসে যাচ্ছে। বাড়ির মেয়েরা টিউশন পড়ে বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছে৷ পুরুষরা মদ খেয়ে এসে নিয়মিত স্ত্রীদের গায়ে হাত তুলছে৷ আমরা অনেকবার ওদের বলেছিলাম দোকান বন্ধ করে দিতে, কিন্তু ওরা করেনি৷ বাধ্য হয়ে আমরা কিছুটা মদ আটকে রেখে আবগারি দফতরে খবর দিই।”
আবগারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রাম থেকে এর আগে কখনওই চোলাই বিক্রির অভিযোগ আসেনি। শুক্রবার অভিযোগ পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। এক আবগারি আধিকারিক জানান, তাঁরা পৌঁছনোর আগেই যেহেতু চোলাই বিক্রেতাকে আটকে রেখেছিলেন মহিলারা, তাতে অন্য বিক্রেতারা সচেতন হয়ে যায়৷ ওই বিক্রেতার পাশাপাশি বাকিরাও নিজেদের মালপত্র লুকিয়ে ফেলেন৷ ফলে গ্রামে একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও আর কিছু পাওয়া যায়নি৷ রাতে গ্রামের মহিলারা লিখিত অভিযোগ তুলে দেন আবগারি দফতরের আধিকারিকদের হাতে৷