• নড়েছে টনক, ‘দামিনী অ্যাপ’ নিয়ে প্রচার করবে প্রশাসন
    আনন্দবাজার | ১৯ মে ২০২৪
  • দিনভর মেঘলা আবহাওয়া। তবুও গুমোট গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। দুপুরে এমনই আবহাওয়াতে ‘মাতল’ (বাঁশ দিয়ে বানানো বিশেষ টুপি) পরে জমিতে এক মনে ধান কাটছেন জনা দশেক কৃষক। ‘দামিনী অ্যাপ’ সম্পর্কে কিছু জানেন? প্রশ্ন শুনে মাথা উঁচু করে তাকান পুরাতন মালদহের মুচিয়ার চল্লিশোর্ধ্ব বিপ্লব সরকার। তিনি বলেন, “কোনও দিন নামই শুনিনি।” কী হবে তা দিয়ে? পাল্টা প্রশ্ন তাঁর।

    বিপ্লবের মতো ‘দামিনী অ্যাপ’ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন বলে জানান পুরাতন মালদহের আট মাইলের ধানের জমিতে কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা। যদিও ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বজ্রপাতের পূর্বাভাসের জন্য ‘দামিনী অ্যাপ’ চালু করেছে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞানমন্ত্রক। কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজি’ এবং ‘আর্থ সায়েন্স সিস্টেম অর্গানাইজেশন’-এর বাজ চিহ্নিতকরণ ‘সেন্সর’ও জেলায় বসানো হয়েছে, দাবি আবহাওয়াবিদদের। তাঁদের দাবি, ‘সেন্সর’ থাকায় ‘অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ২০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকার মধ্যে বাজ পড়ার সম্ভাবনা থাকলে তা টের পাওয়া যাবে।

    বৃহস্পতিবার, বজ্রাপাতে জেলার ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে ‘দামিনী অ্যাপ’-এর ব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা মূলক প্রচার না থাকায় প্রশাসনের ভূমিকায় উঠছে প্রশ্ন। কারণ, বজ্রপাতে মৃত ১১ জনই কেউ জমিতে, কেউ আমের বাগানে গিয়ে মারা গিয়েছেন। পুরাতন মালদহের সাহাপুরের মৃত চন্দন সাহানির স্ত্রী ফাল্গুনী সাহানি বলেন, “বাজ পড়বে জানলে, আমার স্বামীকে কখনও বাগানে যেতে দিতাম না। আবহাওয়া দেখে ঝড়, বৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে জানতে পারি। তবে কখন বাজ পড়বে তা জানার কোনও উপায় নেই। এখানে প্রশাসন বাজ পড়ার খবর আগাম জানিয়ে দিলে মানুষ সতর্ক হতে পারবে।”

    বজ্রপাতে বৃহস্পতিবার জেলায় ১১ জনের মৃত্যুর পরে ‘দামিনী অ্যাপ’ নিয়ে টনক নড়ছে প্রশাসনের। তাদের দাবি, অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন থাকলেই ‘গুগল প্লে স্টোর’-এ থেকে ‘দামিনী অ্যাপ’ যে কেউ ডাউনলোড করতে পারেন। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “দামিনী অ্যাপের মাধ্যমে বজ্রপাতের পূর্বাভাস পাওয়া যায়। তা নিয়ে প্রচার চালানো হবে। এ ছাড়া, ঝড়-বৃষ্টি, বাজের সময় সাধারণ মানুষের কী করণীয়, তা নিয়েও পঞ্চায়েত স্তরেকর্মশালা হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)