• আমাকে দিদি বাঁচিয়ে দিয়ে গেল!
    আনন্দবাজার | ১৯ মে ২০২৪
  • আমি, আমার দুই দিদি রীতা বিশ্বাস (দমদমের বাসিন্দা ও শিক্ষিকা), মিতা গোমস এবং মিতাদিদির মেয়ে দেবস্মিতা দার্জিলিঙে বেড়াতে যাচ্ছিলাম। তাই শুক্রবার রাতে সরকারি ভলভো বাসটিতে উঠেছিলাম শিলিগুড়ি যাব বলে। কলকাতা থেকে গোটা পথ কোনও সমস্যা হয়নি।

    উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলার কাছে সকালে একটি লাইন হোটেলে চা খাওয়ার জন্য বাসটি দাঁড়ায়। সেখানেই সবাই চা খেলাম। কিছু ক্ষণ বিরতির পরে আবার যাত্রা শুরু হল। তখনই চালক তাঁর সহকারী চালককে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেন। দুই চালক গল্পে মজে ছিলেন। তার মধ্যে বাসের গতি বেশ বেড়ে যায়। কানকি পেরিয়ে কিছুটা দূরে, আচমকা উল্টে যায় বাসটি। তীব্র ঝাঁকুনি লাগে। যাত্রীরা বাসের ভিতরেই ছিটকে পড়েন! আমার পাশের আসনে জানলার ধারে রীতাদিদি ছিলেন। আচমকা বাসের ছাদ থেকে একটি লোহার রড দিদির মাথায় পড়ে। দিদিকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু লোকজন তখন কেউ আসেননি। বাসের সহযাত্রীরাও যে যাঁর মতো তখন বেরোনোর মরিয়া চেষ্টা করছেন। কেউ জানলার কাচ ভেঙে বেরোনোর আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। আমি জানলার কাচ ভেঙে মিতাদিদি এবং দেবস্মিতাকে বার করে দিই। দিদির মেয়ে গুরুতর জখম হয়েছে। আমারও হাতে চোট লেগেছে। পথেই যে এমন হবে, ভাবতেও পারিনি!

    কলকাতা থেকে গোটা পথ জানলার ধারে বসে ছিলাম। চা খাওয়ার পরে রীতাদিদি বলল, ও জানলার ধারে বসবে। বসল। জানলার ধারে তো আমারই থাকার কথা ছিল। আমাকে দিদি বাঁচিয়ে দিয়ে চলে গেল! এখন মনে হচ্ছে, ডালখোলা থেকে অন্য চালকের গাড়ি চালানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)