মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মিথ্যে ও ভ্রান্ত, প্রমাণ দিন কোথায় কী বলেছি, মুখ খুললেন কার্তিক মহারাজ
২৪ ঘন্টা | ২০ মে ২০২৪
অনুপ দাস: গোঘাটের জনসভা থেকে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সাধু কার্তিক মহারাজের প্রবল সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সব সাধু তো সমান হয় না। সব সজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরে একজন মহরাজ আছেন, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘের তালিকায় তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। কারণ তিনি ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি আইডেন্টিফাই করেছি কে কে করেছেন। মমতার ওই মন্তব্যর পর এবার এনিয়ে মুখ খুললেন কার্তিক মহরাজ।
কার্তিক মহারাজ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে মঞ্চে সাধু সন্ন্যাসীদের যে অপবাদ দিয়েছেন তাকে চ্যালেঞ্জ করছি। প্রমান দিতে পারলে পদত্যাগ করব। রাজনৈতিক তকমা দেওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রীর অপমান করা নিয়ে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন আগামী দিনে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে বলেও জানান। আর অধীর চৌধুরী বলেছেন ২০১৯ সালের লোকসভায় শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিল তখন কার্তিক মহারাজ তৃণমূলের হয়ে প্রচার করত। এখন বিজেপির হয়ে প্রচার করে। সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুললেন কার্তিক মহারাজ।কার্তিক মহারাজ বলেন,অধীর চৌধুরী যেটা বলেছেন যে আমি যখন মুর্শিদাবাদে আসি তখন অধীরবাবু বহুবার আমার কাছে এসেছেন। আমিও ওঁর কাছে বহুবার গিয়েছি। এমপি ল্যাড থেকে উনি প্রচুর অর্থ দিয়েছেন। বেলডাঙ্গার বিধায়ক আমাদের টাকা দিয়েছেন। সিপিএমের যখন বিনয় চৌধুরী ছিলেন তখন উনি আমাদের জমি দিয়েছিলেন। আমি কোনও রাজনৈতিক প্রচারক নই। করিওনি কখনও। শুভেন্দু অধিকারী মুর্শিদাবাদে এলেই বেলডাঙ্গায় আসেন। তিনিও অনেক সাহায্য করেছেন। ঔরঙ্গাবাদে আমাদের শোভাযাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর আইনজীবী দিয়ে মামলা করে শোভাযাত্রা করার অর্ডার নিয়ে ফিরে যাই। সুতারাং আমি তাঁর প্রশ্ংসা করব না কেন? ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কথা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনেও প্রতিবাদ হবে। ভারত সেবাশ্রমের পক্ষ থেকে বলছি, ইতিমধ্যেই বিশ্বহিন্দু পরিষদ থেকে ফোন করা হয়েছে। আরএসএস, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ থেকে ফোন করেছে। আমি বলেছি আপনারা নিজেদের মতো প্রতিবাদ করুন। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বলব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওঁর শুভবুদ্ধির উদয় হয় ততই ভালো। তাঁর চৈতন্য হোক। তিনি বলেছেন ভারত সেবাশ্রম সংঘকে তিনি শ্রদ্ধা করতেন। উনি প্রমাণ দিন কোথায় ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীরা কোথায় গোললমাল করেন তার প্রমাণ দিন। আমি পদত্যাগ করব।কার্তিক মহারাজ আরও বলেন, আমি ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী। ভারত সেবাশ্রম সংঘ ভারতে ও ভারতে বাইরে সেবাকাজে সুনাম অর্জন করেছে। সেবার সময় জাতি ধর্ম নির্বাশেষে সেবা করা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলায় সংঘের ১২টি স্কুল রয়েছে। সেখানে আশি শতাংশ পড়ুয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের। মুর্শিদাবাদ জেলায় দুটি বড় রিলিফ কাজ হয়েছে। টর্নেডোর সময় কাজ করেছি। প্রশাসন ভেবেছিল আমরা শুধু হিন্দুদের জন্য কাজ করি। কিন্তু মাস্টার রোলে দেখা গেল আশি অংশ মুসলিম। মুখ্যমন্ত্রী দাবি একদমই মিথ্যে ও ভ্রান্ত। তাঁকে আমি চ্য়ালেঞ্জ করছি তিনি প্রমাণ দিন কোথায় কী বলেছি। আমি কার্তিক মহারাজ, আমরা কী ক্ষমতা রয়েছে যে প্রবল প্রভাবশালী তৃণমূলের এজেন্টকে বের করে দেব। এটা আমি বলতে পারি? বললে আমার ধড়ে মাথা থাকবে? এটা সম্ভব?