গবেষিকা ববিতা দত্তের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মী এবং সমর্থকেরা। ‘অভিযুক্ত’ বিভাগীয় প্রধানের গ্রেফতারের দাবিতে সরব পড়ুয়াদের একাংশ। অন্য দিকে, অভিযুক্তের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
গত বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষিকা ববিতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে মাটিগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে মৃতার পরিবার। অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার গবেষিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বিভাগীয় প্রধান। কিন্তু চলতি মাসে গবেষিকাকে তিনি জানান যে, বিয়ে করা সম্ভব নয়। তার পরেই ‘রহস্যজনক’ ভাবে মৃত্যু হয়েছে ববিতার।
সোমবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ল-মোড়ে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এবিভিপি রাজ্য সম্পাদক দীপ্ত দে-র অভিযোগ, ‘‘ববিতা দত্ত আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ বস্তুত, ববিতার ঘর থেকে একটি চিঠি উদ্ধার হয়। যা সুইসাইড নোট বলেই মনে করা হচ্ছে। সেখানে অধ্যাপকের নাম রয়েছে। অন্য দিকে, মৃতার ভাই মাটিগাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেখানে ববিতাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি, পরীক্ষায় ভাল নম্বর পাইয়ে দেওয়ার কথা এবং ভয় দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।
তদন্তে নেমে পুলিশ ববিতার ভাড়াবাড়ি থেকে ওই অধ্যাপকের বেরিয়ে যাওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু তার পরেও কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ছাত্রী-শিক্ষক অথবা গবেষক-অধ্যাপকের সম্পর্ক সম্মানের, শ্রদ্ধার এবং স্নেহের। সেখানে এই রকমের ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়।’’ তিনি জানান, এই ঘটনায় সিদ্ধার্থশঙ্কর লাহাকে সমস্ত পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। বিষয়টি নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এবং পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছে।