এক সময়ে আমাদের আশপাশে চালতা গাছের দেখা মিলত। এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসা চালতা গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বীরভূম বনবিভাগ। জানা গিয়েছে, সামনের বনসৃজনের মরসুমে অন্য প্রজাতির গাছের সঙ্গে বেশ কয়েক হাজার চালতা চারা লাগানো হবে। বন দফতরের বেশ কয়েকটি রেঞ্জ অফিসে সে জন্য চালতা চারা তৈরি করা হয়েছে।
হঠাৎ চালতা কেন?
বনদফতর সূত্রে খবর, পশু পাখিদের খাদ্য জোগানোর মতো (মূলত ফল ও বীজ উৎপাদনকারী) গাছের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে বনাঞ্চল থেকে। কমে যাচ্ছে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতি তালিকার বেশ কিছু গাছও। গত বছর থেকেই সেই সব গাছের সংখ্যা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে বীরভূমের বনবিভাগ। মহুয়া, গাবশাল, পিয়াশাল, কুসুম, হলদি কসাই, তেতুঁল, জাম, আতার পাশাপাশি রয়েছে চালতা। তবে চালতা লাগানো হচ্ছে মূলত হাতিদের কথা মাথায় রেখেই। কারণ হাতিদের অত্যন্ত প্রিয় ফল এটি।
বীরভূমের দেবাশিস মহিমাপ্রসাদ মহান্তি বলেন, ‘‘যেগুলি পশু, পাখির খাবার জোগায়, অথচ জঙ্গল থেকে লোপ পেয়ে যাচ্ছে, সেই সব গাছের সংখ্যা বাড়াতে চাই আমরা।’’ ডিএফও জানান, বীরভূমে হাতিদের আনাগোনা রয়েছে। যে পথ ধরে হাতিরা বীরভূমে ঢোকে, সেই সব জঙ্গল এলাকায় বেশ কয়েক হাজার চালতা চারা লাগানো হবে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনগর দুবরাজপুর ও সিউড়ি রেঞ্জে প্রায় সাত হাজার চারা তৈরি হয়েছে। চালতা শুধু পশু, পাখিদের জন্যই নয়, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বৃক্ষ মানুষের কাজে লাগবে। বছর ৮-১০ বছরের মধ্যেই পরিণত হয়ে যাবে। বৈচিত্র্য বাড়বে বনাঞ্চলের।
আরও একটি বিষয়ে নজর দিয়েছে বনবিভাগ। অধিকাংশ চারাগাছ (কমপক্ষে ৬-৭ ফুট উচ্চতার) লাগানোর কথা ভাবা হয়েছে। তাই এখন থেকেই বড় প্লাস্টিকের ব্যাগে বা জারে চারা লাগিয়ে লালন করা হচ্ছে। এতে দু’টি বিষয় সুনিশ্চিত করতে চাইছে দফতর। এক, জঙ্গলে আগুন লাগানোর প্রবণতা এবং গরু, ছাগলের মুখ থেকে গাছগুলিকে রক্ষা করা। দুই, বড় গাছ লাগালে বৃষ্টিপাতের খামখেয়ালিপনা সামলে গাছগুলিকে বাঁচানো সহজ হবে।