বাঁকুড়ায় জনসভার জন্য চাষজমির ফসল নষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী— এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ওন্দার নিকুঞ্জপুরে রবিবার যে জমিতে সভার জন্য মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মমতা, সোমবার তিনিও সেই জমিতেই পাল্টা সভা করলেন। মোদীর জন্য তৈরি হেলিপ্যাডেই মমতার কপ্টারও নামে এ দিন। ফলে, মমতার বিরুদ্ধেও জমির ফসল নষ্ট করার পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
ঘটনাচক্রে, এ দিন ভোট ছিল মমতার জমি আন্দোলনের কেন্দ্র সিঙ্গুরে। এ দিনই ওন্দার সভায় মমতা বলেন, “কৃষকেরা জানালেন, তাঁদের জমি, ফসল নষ্ট করে সভা করে গিয়েছে শুধু আমাকে গালাগালি করার জন্য। আজ আমার এখানে সভা ছিল না। মেদিনীপুরে, পাঁশকুড়ায় সভা রয়েছে। তা-ও মিথ্যা কথার জবাব দিতে আর কৃষকদের সমর্থনে এখানে সভা করতে এসেছি। যাঁদের ফসল নষ্ট হয়েছে, বাদাম নষ্ট হয়েছে, তা প্রশাসনিক স্তরে দেখা হবে, যাতে ক্ষতিপূরণ পায়।” প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল সাফ করার সময় সেখানে থাকা কিছু বড় গাছ কেটে ফেলারও অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। বিজেপি অবশ্য তা অস্বীকার করে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মোদীর সভা ও হেলিপ্যাড গড়ার জন্য নিকুঞ্জপুরের মাঠ সংলগ্ন বেশ কয়েক বিঘা চাষ জমি ব্যবহার করে বিজেপি। ওই জমিতে বোরো ধান, তিল, রাঙাআলু, বাদামের চাষ হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সে জন্য চাষিদের ফসলের মূল্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে আগে চুক্তি করা হয়েছে। তাঁরা ফসল তুলে নিয়ে স্বেচ্ছায় জমি ব্যবহার করতে দেন।
যদিও এ দিন চাষিদের মধ্যে সুভাষ মাজি, তপন মাজি, দয়াময় মাজিরা বলেন, “সভা বা হেলিপ্যাড গড়তে যে পরিমাণ জমি বিজেপি চুক্তি করেছিল, তার বাইরেও কিছু জমির ফসল কর্মী-সমর্থকদের পায়ের চাপে নষ্ট হয়েছে। তার ক্ষতিপূরণ পাইনি।” গায়ত্রী মাজি নিজের জমিতে ভিড়ের পায়ের চাপে নুয়ে পড়া ধানগাছ দেখিয়ে বলেন, ‘‘কতবার ওদের বললাম, অন্য পথ দিয়ে সভায় যেতে। শুনলই না।’’ চাষিদের একাংশের দাবি, এ দিন তৃণমূলের একই জায়গায় সভা করার ফলে নতুন করে কিছু জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বিজেপির বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, “চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও ক্ষতি হলে মেটানো হবে। কিন্তু তিনিও ওই মাঠেই সভা করে নতুন করে চাষের ক্ষতি করলেন। তার কী হবে?’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর পাল্টা, ‘‘বিজেপি কর্মীরা আগেই এলাকার সমস্ত চাষ জমি তছনছ করেছে। নতুন করে আর কী ক্ষতি হবে? দিদি বরং চাষিদের সুরাহা দিতে এসেছেন।’’