লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম পর্ব শেষ হতে নরেন্দ্র মোদীকে ‘হিটলার’ বলে অভিহিত করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে মোদী একাধিক বার বলেছেন, তৃতীয় দফায় তাঁর সরকার যা কাজ করবে, তার প্রভাব থাকবে আগামী এক হাজার বছর। আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা সুখেন্দুশেখর রায় ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ খবরের কাগজের পুরনো সংস্করণ তুলে ধরেছেন, যেখানে রয়েছে অ্যাডলফ হিটলারের ভবিষ্যদ্বাণী। হিটলার বলছেন, তাঁর তৃতীয় রাইখের প্রভাব থাকবে আগামী ১ হাজার বছর। ডেরেকের বক্তব্য, “মহিলাদের নিরাপত্তা, মূল্যবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের প্রশ্নে মোদীর গ্যারান্টি আসলে প্রতারণা। বাংলাকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছেন তিনি। যে ব্যক্তি ১০ বছরে কিছু করে উঠতে পারেন না, এখন হিটলারের মতো বলছেন তাঁর সভ্যতা টিঁকে থাকবে ১০০০ বছর! তিনি কি নরেন্দ্র হিটলার মোদী?”
অন্য দিকে এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারেরবক্তব্য, “ওরা আয়নায় যে ছবিটা দেখেন, সেটাই বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বড় স্বৈরাচারী নেতা দেশে কেন, পৃথিবীতেও খুঁজে পাওয়া মুশকিল! তিনি সামান্য কার্টুন আঁকলে সেই ব্যক্তিকে জেলে ঢুকিয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। অন্য দিকে ভোট মরসুমে বিরোধীরা মোদীজিকে ব্যঙ্গ করে তাঁর নাচের মিম বানালে, তিনি বিষয়টিকে হাসিঠাট্টার মধ্যেই নিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত কালই একটি সাক্ষাৎকারে মোদী বলেছিলেন, “এখন এমন অনেক ঘটনা ঘটছে যা দেশকে আগামী এক হাজার বছরের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমার এ ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা যে এই সময়টা আমাদের সময়।” এর আগে সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময়েও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “দেশকে আগামী এক হাজার বছর পর্যন্ত সমৃদ্ধি এবং সিদ্ধির শিখরে দেখতে চাই। তৃতীয় দফায় আমরা এলে তা এক হাজার বছর রাষ্ট্রকে মজবুত করবে।”
মোদীকে নাৎসি নেতার সঙ্গে এই প্রথম তুলনা করল তৃণমূল, বিষয়টি এমন নয়। গত শীতকালীন অধিবেশনে দলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় ৯০ বছর আগের নাৎসি জার্মানির সংসদকে অকেজো করে বিল পাস করানোর প্রসঙ্গ তুলে সেই ঘটনাটির তুলনা করেছিলেন, ভারতীয় সংসদে ১৪৬ জন সাংসদকে বহিষ্কার করে মোদী সরকারের দণ্ড সংহিতা বিল পাশ করানোর সঙ্গে। প্রসঙ্গত বছর দুয়েক আগে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হিটলারের তুলনা করে ঘোর বিতর্ক তৈরি করেছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সুবোধকান্ত সহায়। বলেছিলেন, “মোদীর পরিণতি হবে হিটলারের মতো।” সুখেন্দুশেখর অবশ্য সরাসরি এই দুই নেতার মধ্যে তুলনা টানেননি। বরং রাজনৈতিক ইতিহাসের দু'টি ঘটনা পাশাপাশি রেখে বলছিলেন, “যখনই আমাদের দেশে কোনও বড় ঘটনায় জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়, তখন অনেকে বলে তুঘলকি শাসন বা হিটলারি রাজত্ব চলছে। কেন এমন বলা হয়, সেটা খুঁজতে গিয়েই এই তথ্য পেলাম।”