রামকৃষ্ণ মিশনের বাড়িতে হামলা, জমি দখল করতে ৭ জনকে তুলে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা
২৪ ঘন্টা | ২১ মে ২০২৪
নারায়ণ সিংহরায়: শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের একটি বাড়িতে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। রবিবার ভোরে শিলিগুড়িতে সেবক হাউস নামে ওই বাড়িতে হামলা চালায় জন তিরিশের একটি দুষ্কৃতীদল। জানা যাচ্ছে স্থানীয় কে জি এফ গ্রুপকে ব্যবহার করে সেই বাড়ি ও জমি দখল করতে চাইছে জমি মাফিয়ারা।
শিলিগুড়ি শালুগারা সংলগ্ন সেবক হাউস অর্থাৎ রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পত্তি দখল ঘিরে ইতিমধ্যে তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। গতকাল ঝাড়গ্রামের সভা থেকে কড়া ভাষায় এর নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন ওই জমি ফিরে পেতে রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসীদের থানা-সহ সরকারি ভূমি রাজস্ব দফতরে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে।পুলিস সূত্রের খবর স্থানীয় দুষ্কৃতীদের অর্থাৎ কেজিএফ গ্রুপকে ব্যবহার করে মিশনের জমি দখল করতে চাইছে জমি মাফিয়ারা। রবিবার ভোরে প্রায় ৩০ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী রামকৃষ্ণ মিশনের ওই সেবক হাউসের ভেতরে ঢুকে কর্মীদের মারধর করে তাদের তুলে নিয়ে চলে যায়। তারপর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের ছেড়ে দেয়। ঘটনা নিয়ে মুখ খুললে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কেজিএফ গ্রুপের তত্ত্বাবধানে জনা কুড়ি মহিলাকে রামকৃষ্ণ মিশনের সেবক হাউসে ঢুকিয়ে তা দখল নেওয়ার চেষ্টা করে জমি মাফিয়ারা। যদিও পরে পুলিসের চাপের মুখে পড়ে তারা সেখান থেকে সরে যায়। সেই বাড়ি সিল করে দিয়েছে পুলিস। যদিও সেই সিল নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদি পুলিস বাড়ি সিল করে তাহলে সরকারি অশোক স্তম্ভ বা থানার সিল ব্যবহার করার কথা। কিন্তু তালার উপর ডি কে স্ট্যাম্প লাগিয়ে সিল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।শিলিগুড়ির চারমাইল এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সেবক হাউস নামে একটি বাড়ি এস কে রায় নামে এক ব্যক্তি রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করেন। জমির পরিমাণ প্রায় ২ একর। বাজারদর প্রায় প্রায় একশো কোটি টাকা। ওই জমির উপরেই চোখ পড়েছে জমি মাফিয়াদের। বেলুড় মঠকে ওই জমি দান করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যে জেলায় এই বাড়ি সেই জেলার রামকৃষ্ণ মিশনেক দায়িত্ব থাকবে সম্পত্তিটি। সেই শর্ত অনুযায়ী জলপাইগুড়ি জেলার রামকৃষ্ণ মিশনের দায়িত্বে ছিল বাড়িটি।সেবক হাউসে যে সিল করা হয়েছে সেখানে কোনও সরকারি সিলমোহর নেই। বরং ডিকে নামে এক প্রমোটারের লেখা রয়েছে। জানা যাচ্ছে ভুমি সংস্কার দফতর থেকে একটি নথিও বের করেছে প্রমোটার। বাড়ি থেকে রামকৃষ্ণ মিশনের ফলকনামাও খুলে নিয়ে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। এনিয়ে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ঠ মিশন। কারণ থানাকে জানানো হলেও তাদের কোনও হেলদোল নেই। জমি মাফিয়ারা নাকি এর আগে মিশনকে হুমকিও দিয়েছে। পুলিসকে জানালেও কিছু হয়নি। এনিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের এক আধিকারিক বলেন, জনা ৩০ লোক অস্ত্র নিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। সেখানে ২ জন গার্ড ছিল। আরও ৫ জন অন্যান্য কর্মী ছিল। ওদের হাত বেঁধে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তারপর এনজেপির কাছে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয়। এনিয়ে পুলিসের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।