কাঁদতে কাঁদতে এসেছিলেন সেই মহিলা? থানায় বয়ান দিলেন তিন রাজভবন কর্মী, ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ
আনন্দবাজার | ২১ মে ২০২৪
শ্লীলতাহানির ঘটনায় নিগৃহীতার অভিযোগ অস্বীকার করলেন রাজভবনের তিন কর্মী। মঙ্গলবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় তলব করা হয়েছিল তাঁদের। পুলিশের কাছে দেওয়া বয়ানে রাজভবনের কর্মীরা জানান, তাঁরা ওই মহিলাকর্মীকে আটকাননি। তিনি কাঁদতে কাঁদতে নেমে আসছিলেন। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে সূত্রের খবর, ওই তিন কর্মী স্বীকার করেছেন, নিগৃহীতা তাঁদের জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন।
রাজভবনের শ্লীলতাহানিকাণ্ডের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সেই ঘটনার অনুসন্ধান করছে কলকাতা পুলিশ। গত ২ মে হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রাজভবনেরই কর্মচারী। তাঁর অভিযোগ, ওই দিনই রাজভবনের কনফারেন্স রুমে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনি। গত ২৪ এপ্রিলও একই ঘটনা ঘটেছে তাঁর সঙ্গে। সেই ঘটনার অনুসন্ধানের মাঝেই গত ১৮ মে হেয়ার স্ট্রিট থানায় নতুন একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সেই অভিযোগে বলা হয়, ঘটনার দিন রাজভবনের তিন কর্মী নিগৃহীতাকে আটকে রাখেন রাজভবনে। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনের ঘটনা নিয়ে অভিযোগকারিণী আদালতে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঁচ ঘণ্টা গোপন জবানবন্দি দেন। তাঁর অভিযোগ, যে দিন তাঁর সঙ্গে রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে, সে দিন রাজভবন থেকে বেরোতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশের এফআইআরে নাম থাকা এসএস রাজপুত, কুসম ছেত্রী এবং সন্ত লালকে তলব করা হয়েছিল হেয়ার স্ট্রিট থানায়। মঙ্গলবার দুপুরের পরে তাঁরা থানায় হাজিরা দেন। সূত্রের খবর, পুলিশকে তাঁরা জানান, ঘটনার দিন ওই অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসতে দেখেন। তখন তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি কাঁদছেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে নিগৃহীতা তাঁদের জানান রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। আর ভেতরে কিছু একটা হয়েছে। পুলিশের কাছে এমনই দাবি করেছেন এসএস রাজপুতরা। তবে মহিলাকে আটকানোর অভিযোগ স্বীকার করেননি তাঁরা। তাঁরা জানান, কারও নির্দেশে ওই মহিলাকে আটকানো হয়নি।
এসএস রাজপুতদের আগেও দু’তিন বার তলব করেছিল হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। কিন্তু এক বারও হাজিরা দেননি তাঁরা। রবিবার হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা এড়িয়ে যান। উল্টে পুলিশের কাছে সময় চেয়েছিলেন তাঁরা। যে তিন জনকে তলব করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে এসএস রাজপুত জানিয়েছিলেন, তিনি কলকাতার বাইরে রয়েছেন। রাজপুত ১০দিন সময় এবং এফআইআরের কপিও চেয়েছিলেন পুলিশের কাছে। বাকি দু’জন সাত দিন সময় এবং এফআইআরের কপি চান। তার পর পুলিশ আবারও তাঁদের মঙ্গলবার হাজিরা দেওয়ার কথা বলে।
কলকাতা পুলিশ স্পষ্ট জানিয়েছিল, বার বার তলব এড়িয়ে গেলে রাজভবনের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। সেই আশঙ্কা করেই তিন জন ব্যাঙ্কশাল আদালতে জামিনের আবেদন করেন। মঙ্গলবার সকালে আদালত ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। তার পরই থানায় হাজিরা দেন এসএস রাজপুতরা।