• মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বালুর নাম, উজ্জীবিত অনুগামীরা
    আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৪
  • ভোটের আবহে না থেকেও ফিরে এলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ফের উঠে এল বালু-প্রসঙ্গ।

    মঙ্গলবার বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সমর্থনে অশোকনগরের হরিপুরে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি এবং সিপিএমের সমালোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি একটা নোংরা রাজনৈতিক দল। তার সঙ্গে জুটেছে সিপিএম। শুনতে পাচ্ছি, হাবড়ায় একটু মিটিং-মিছিল করছে বালু নেই বলে। আইন আইনের পথে চলবে। আইন যে দিন মুক্তি দেবে, সে (বালু) মুক্তি পাবে।’’

    গত বছর রেশন দুর্নীতি বণ্টন মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)। এখনও জেলবন্দি তিনি। এক সময়ে গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা মমতা চিনতেন কার্যত বালুর চোখ দিয়ে। একের পর এক ভোটে বালু ছিলেন এই জেলায় তাঁর প্রধান সৈনিক। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দলের নেতা-কর্মীরা অনেকে ‘বালুদা’র সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলছিলেন। সভা-সমিতিতে তাঁর নাম-ছবি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। জেলার মধ্যে একমাত্র হাবড়ায় বালুর অনুগামীদের একাংশ ছিলেন ব্যতিক্রম।

    ১২ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী হাবড়ায় প্রশাসনিক সভা থেকেও বালুর নাম নেননি। তারপর থেকেই হাবড়ার তৃণমূল নেতাদেরও প্রকাশ্যে বালুর নাম নিতে দেখা যাচ্ছিল না। ভোটের প্রচারে কার্যত ব্রাত্যই থাকছিল বালু-প্রসঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ফের তাঁর নাম উঠে আসায় জেলবন্দি বালুর অনুগামীরা অনেকে খুশি। হাবড়ার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘এ দিন দিদি বালুদার নাম নেওয়ায় আমরা উৎসাহ ফিরে পেলাম।’’

    তৃণমূলের হাবড়া বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন কমিটি চেয়ারম্যান তথা হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘হাবড়ায় সিপিএম মিটিং-মিছিল করছে। তবে সে সব কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ সামিল হচ্ছেন না। সিপিএম জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘২০১১ সাল থেকে বালুদা হাবড়ায় প্রচুর উন্নয়ন করেছেন। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সামগ্রিক উন্নয়নকে সামনে রেখে আমরা এ বার সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে লড়াই করছি।’’

    মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর পরে বলেন, ‘‘তৃণমূলের কে জেলে আর কে বাইরে, তাতে সিপিএমের কিছু যায় আসে না। সিপিএম লড়াইয়ে ছিল, এখনও আছে।’’ সিপিএম নেতৃত্বের কটাক্ষ, বালুকে তৃণমূল ভুলতে পারছে না!

    বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করে দিলেন, তাঁর সমস্ত অপকর্মের দায় মুখ্যমন্ত্রীর। তাই তিনি জ্যোতিপ্রিয়কে ভুলতে পারছেন না। জ্যোতিপ্রিয়ের যাবতীয় দুর্নীতির মদতদাতা মুখ্যমন্ত্রী, এ দিন তা প্রমাণ হয়ে গেল।’’ বিজেপির বারাসত কেন্দ্রের প্রার্থী স্বপন মজুমদারের কথায়, ‘‘যে মুখ্যমন্ত্রী শেখ শাহজাহান এবং চাল চোর জ্যোতিপ্রিয়কে সমর্থন করেন, তাঁর কাছ থেকে আমাদের শংসাপত্র নিতে হবে না। তিনি আগের নিজের দিকে তাকান।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)