নতুন জেলা গঠন নিয়ে ফের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর, সংশয়ে বসিরহাট
আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৪
এলাকার লোকজনও এখন মনে করতে পারেন না, এই নিয়ে বসিরহাট জেলা তৈরির কথা তাঁরা কত বার শুনলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর মুখে!
মমতা এ দিন বলেন, ‘‘বসিরহাটের মানুষকে জেলা সদরে যেতে হলে অনেক দূর পথ অতিক্রম করতে হয়। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখে তৈরি হবে দু’টি জেলা। বসিরহাটেও হবে নতুন জেলা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা অনেক বড় অঞ্চল। ফলে এটা আমরা ঠিক করেছি। সুন্দরবন নিয়ে একটা মাস্টার প্ল্যান করছি। সেখানে আপনাদের জেলাও পড়বে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, ইতিমধ্যে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা ও পুলিশ জেলা তৈরি হয়েছে।
বসিরহাট মহকুমার মানুষকে এখন নানা কাজে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সদর বারাসতে আসতে হয়। তাতে সময় ও খরচ প্রচুর। বিশেষ করে, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালির মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে যাতায়াতে প্রায় গোটা দিন কেটে যায়। নদী পেরিয়ে, টোটো-অটো ধরে, ট্রেনপথে পৌঁছতে হয় বারাসত। স্থানীয় বাসিন্দা রমেন মণ্ডল, সূর্যকান্ত হালদারদের মতে, ‘‘বহু দিন ধরেই শুনে আসছি, বসিরহাট জেলা তৈরি হবে। কোন ব্লক কোন জেলার মধ্যে থাকবে, তা অবশ্য কখনও স্পষ্ট ভাবে জানাননি মুখ্যমন্ত্রী। জেলা তৈরির জন্য এই এলাকায় উপযুক্ত পরিকাঠামোও নেই। ফলে আদৌ জেলা গঠন সম্ভব কি না, তা নিয়ে আমাদের সংশয় আছে।’’
সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোর কথায়, ‘‘জেলা তৈরি হলে সন্দেশখালি বিধানসভা বসিরহাট জেলার মধ্যে রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী কাছে প্রস্তাব জানাব। সন্দেশখালি যদি সুন্দরবন জেলার মধ্যে পড়ে, তা হলে মানুষের খুবই সমস্যা হবে।’’
এ বিষয়ে বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘নির্বাচন এলেই উনি জেলা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা তৈরির জন্য যে পরিকাঠামো দরকার, তা এখানে নেই।’’ কংগ্রেস নেতা হিরন্ময় দাসের কথায়, ‘‘বহু বছর ধরে শুনে আসছি, সুন্দরবন ও বসিরহাটে দু’টি জেলা হবে। ভোট এলে কথাটা বেশি শুনতে পাই। কিন্তু বাস্তবে কতটা হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।’’
বসিরহাট ও টাকির মিষ্টি খুবই বিখ্যাত বলেও এ দিন জানিয়েছেন মমতা। বসিরহাটে নতুন মিষ্টি হাব তৈরির প্রতিশ্রুতিও দেন। স্মৃতিচারণ করে মমতা বলেন, ‘‘টাকি সরকারি কলেজ খুবই ইমপর্ট্যান্ট (গুরুত্বপূর্ণ)। ছোটবেলায় যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম, সে সময়ে প্রায়ই বক্তৃতা করতে টাকিতে আসতে হত। এখানকার মিষ্টি বিখ্যাত। ছাত্রছাত্রীরা আমাকে ছানার মিষ্টি খাওয়াত। বসিরহাটের মিষ্টি ভাল। এখানকার জন্য মিষ্টি হাব করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ ঝড়-বৃষ্টি হলে তিনি বার বার বসিরহাটে ছুটে আসেন বলে জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘১৫ কোটি টাকার ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে।’’