কোলাঘাটের ভাড়াবাড়িতে পুলিশি হানার ঘটনার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বলেছেন। জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘বিবরণ দিয়েছি গোটা ঘটনার।’’ পাশাপাশি, পুলিশি হানার ঘটনায় বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও দায়ের করলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ‘‘এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’
মঙ্গলবার বিকেলে শুভেন্দুর কোলাঘাটের বাড়িতে যায় পুলিশ। অভিযোগ, ৭০-৮০ জন পুলিশকর্মী বাড়ি ঘিরে ফেলেছিলেন। পুলিশের দাবি, তারা এক দুষ্কৃতীর খোঁজে সেখানে গিয়েছিল। যদিও পুলিশের দাবি উড়িয়ে দিয়ে শুভেন্দুর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ‘হামলা’ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির লোকের উপস্থিতি ছাড়া কী ভাবে অভিযান হতে পারে? যদি দুটো ভাঙা বন্দুক বা জাল নোট বা মাদক রেখে যায়, তার দায়িত্ব কে নেবে?’ বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, যদি সার্চ ওয়ারেন্ট থাকে, হাই কোর্টের অনুমোদন থাকে, তা হলে তিনি অনুমতি দিতেন অভিযানের। কিন্তু তাঁর উপস্থিতিতে তল্লাশি করতে হবে পুলিুশকে। তিনি বলেন, ‘‘আমি আইন মেনে চলি।আর আইনি পথেই এর মোকাবিলা করব। রাতের মধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ নির্বাচন কমিশনকে পাঠাব। যে পুলিশরা গিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
পুলিশি অভিযানের বিরুদ্ধে বুধবারই শুভেন্দু হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলা গ্রহণও হয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তাঁর বেডরুমে পর্যন্ত পুলিশ ঢুকে পড়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ওরা যথেষ্ট অসভ্যতামি করেছে। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওখানে ছিল। এর নেতৃত্বে ছিলেন সিই তমলুক চম্পকরঞ্জন চৌধুরী।’’ শুভেন্দুর আরও অভিযোগ, তাঁর ভাড়াবাড়িতে কোনও কিছু রেখে এসে তাঁকে ফাঁসানোর মতলব করা হচ্ছিল। মমতার সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমরা কোন রাজ্যে বসবাস করছি! নির্বাচন কমিশন কেন সৌরভ সিন্হা (ইন্সপেক্টর) এবং সিআই তমলুককে সাসপেন্ড করবে না? আমি কমিশনে কমপ্লেন করছি। আমার দাবি, ওঁদের সাসপেন্ড করতে হবে। আর এতে যদি পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার যুক্ত থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এর (হানা) পিছনে কে আছে আমি জানতে চাই।’’
অন্য দিকে, শুভেন্দুর কোলাঘাটের বাড়িতে পুলিশি ‘অভিযানের’ পাশাপাশি ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের সেক্রেটারির খড়গপুরের বাড়িতে যায় পুলিশ। হিরণের আপ্তসহায়ক তমোঘ্ন দে-র বাড়িতেও পুলিশি হানা হয়। এ ছাড়া কেশপুরের বিজেপি নেতা সৌমেন মিশ্রের বাড়িতে মধ্যরাতে যায় পুলিশ। যদিও কী কারণে ওই অভিযান, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে হিরণ বলেন, ‘‘আমার আপ্তসহায়কের মা অসুস্থ। রাতে তিনি যদি দরজা খুলে দিতেন, টাকা, পিস্তল, হেরোইন রেখে আসতে পারত ওরা। আমার পার্টির কারও নামে কেস দিত। আমাকে ফাঁসাত। এটাই তো এদের মোটিভ। মানুষ দেখছে।’’