কলকাতা ও শহরতলিতে ভোট, রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে অধিকাংশ বাস মিনিবাস, আশঙ্কা যাত্রীভোগান্তির
আনন্দবাজার | ২২ মে ২০২৪
আর মাত্র দুই দফার ভোট বাকি। এই দুই দফা ভোটের জন্য কলকাতা শহরের রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে বেশির ভাগ বাস মিনিবাস। তাই আগামী দু’সপ্তাহ জুড়ে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তির আশঙ্কা করছে বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনগুলি। এপ্রিল মাসে ভোটের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বেসরকারি বাস, মিনিবাস নিতে শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। আগামী শনিবার পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় লোকসভা নির্বাচন। সেই জন্য বেশ কিছু বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। আর শেষ দফায় ভোট কলকাতা-সহ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আসনগুলিতেগুলিতে। তাই আগামী ২৭ ও ২৮ তারিখ থেকে কলকাতা শহর ও শহরতলির মধ্যে চলাচল করা বাস, মিনিবাসের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত তুলে নেওয়া হবে বলেই খবর।
পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শেষ দফার ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজার স্থানীয় থানা ও মোটর ভেহিকেলস বিভাগ বাস নিচ্ছে। তাই আগামী দু’সপ্তাহ রাস্তায় বেসরকারি বাস কম সংখ্যাতেই পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সময় যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই ৯০ শতাংশ বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হলে তার বিকল্প পরিবহণের বন্দোবস্ত করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে বাসমালিক সংগঠনগুলি। ৪ জুন ভোটগণনা। তাই পয়লা জুন শেষ পর্বের ভোট হয়ে গেলেও সব গাড়ি যে বাসমালিকদের কাছে ফিরে আসবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই বলেই জানাচ্ছে কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র। কারণ, ভোটগণনার আগে ভোটকর্মীদের জন্য পরিবহণের বন্দোবস্ত করতেও বিরাট আয়োজন করতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। এমতাবস্থায় কলকাতা শহর ও শহরতলিতে আগামী কয়েক দিন যানবাহনের আকাল থাকবে বলেই মনে করছে পরিবহণ সংগঠনগুলি। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতরের কিছু করার নেই বলেই জানা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “আমরা যাত্রী সাধারণের কাছে আগে থাকতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ, ভোটের পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসমালিকদের বাস দিয়ে দিতে হচ্ছে। বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই যাত্রী সাধারণের ভোগান্তির কথা জানলেও আমাদের পক্ষে তার সুরাহা করা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রস্তাব ছিল, ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাস নিয়ে বাকি সাধারণ যাত্রীদের পরিষেবার জন্য ছেড়ে দেওয়া হোক। কিন্তু ভোটের কাজে বেশি সংখ্যক বাস লাগায় সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি নির্বাচন কমিশনের পক্ষে। তাই নিরুপায় হয়েই আমরা ভোটের কাজে বাস ছেড়ে দিচ্ছি।” জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে খুলে যাচ্ছে রাজ্যের সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই সাধারণ মানুষের পক্ষে বাস, মিনিবাসের চাহিদা জুনের প্রথম সপ্তাহে অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিরুপায় রাজ্য পরিবহণ দফতর ও বেসরকারি বাসমালিকেরা। গণনাপর্ব শেষ হলে ৪ জুনের পর বাস মিনিবাসগুলিকে তাদের মালিকদের কাছে ফেরানো হবে। তার পরে বেসরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।