• বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন বন্ধে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৩ মে ২০২৪
  • কলকাতা, ২২ মে: সংবাদপত্রে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের বিজ্ঞাপন নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, বুধবার এই মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আজ এই মামলার শুনানি চলাকালীন বলেন, ?আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী, সম্পূর্ণভাবে পোস্টার, ব্যানার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি, বিমানবন্দরে যদি যান, দেখবেন সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকতে পারে। যে কোনও বিজ্ঞাপনের একটা লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত।?
    গত ২০ মে সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয়, ?গত ৪, ৫, ১০ এবং ১২ মে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিল বিজেপি, সেই রকম কোনও বিজ্ঞাপন আর প্রকাশ করা যাবে না৷? কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এই রায় দেয়। সেই রায়ে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ?যে কোনও ধরনের সংবাদমাধ্যমে এখন আর এই ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি৷? আদালত আরও জানায়, আদালত যতদিন না পরবর্তী নির্দেশ দিচ্ছে, ততদিন কোনও সাংবাদমাধ্যমে ওই বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না৷
    সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় গেরুয়া শিবির। সেখানে আজ বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা খেল রাজ্য বিজেপি। আজ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবেন না তাঁরা। তবে সিঙ্গল বেঞ্চে গিয়ে নির্দেশ প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতে পারবে বিজেপি।
    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৪, ৫, ১০ এবং ১২ মে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজেপি-র যে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল, সেই বিজ্ঞাপনের একটিতে ‘দুর্নীতির মূল মানেই তৃণমূল’, আর অন্যটিতে ‘সনাতন বিরোধী তৃণমূল’ স্লোগান ছিল৷ বিজেপির এই দুটি বিজ্ঞাপনে আপত্তি জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন বিজেপি-র রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে শোকজ করে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে দলের রাজ্য সভাপতিকে এই শোকজের জবাব দিতে বলে।
    মামলার শুনানিতে নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, এই বিজ্ঞাপনের ফলে সংবিধানের ১৯ এবং ২১ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে। পরে বিজ্ঞাপন ছাপার বিষয়েও সংবাদমাধ্যমগুলিকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ১৯৯৬ সালের গাইডলাইন মেনে চলার জন্য সংবাদপত্রগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি ভট্টাচার্য।
    এরপর তৃণমূল বিজেপি ও কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। তাদের অভিযোগ, ‘কমিশনের যে পদক্ষেপ করার ছিল, সেই পদক্ষেপ করা হয়নি৷ নির্বাচনী বিধি না মেনে, অসম্মানজনক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল৷’ তৃণমূলের আরও অভিযোগ, বিজ্ঞাপনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে যেভাবে ‘সনাতন বিরোধী’ বলে তুলে ধরা হচ্ছে, তা নিয়ম বিরুদ্ধ৷ শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে দাবি করা হচ্ছে। যা বিভ্রান্তিকর, বেঠিক ও অবমাননামূলক৷
    সেই মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার কড়া নির্দেশ দেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। মামলার শুনানির সময় নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা করার পাশাপাশি বিচারপতি মন্তব্য করেন, এই বিজ্ঞাপনের ফলে সংবিধানের ১৯ এবং ২১ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে। পরে বিজ্ঞাপন ছাপার বিষয়েও সংবাদমাধ্যমগুলিকে বিশেষ নির্দেশ দেয় সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ১৯৯৬ সালের গাইডলাইন মেনে চলার জন্য সংবাদপত্রগুলিকে নির্দেশ দেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ‘যে কোনও ধরনের সংবাদমাধ্যমে এখন আর এই ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি৷ বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূল যে অভিযোগ করেছিল তা নিয়ে যে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ছিল কমিশন সেটা করেনি৷’ বিচারপতি সতর্ক করে বলেন, ‘আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন হতে পারে এমন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না’৷
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)