• ‘ভাষণে মেরুকরণ নয়, তারকা প্রচারকদের সামলান’, মোদির নাম না করে নাড্ডাকে চিঠি কমিশনের
    বর্তমান | ২৩ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বিকাশ নয়, ৪০০ পারও নয়। গত কয়েকদিন ধরে বিভাজন ও মেরুকরণের যে চেনা অস্ত্রে নরেন্দ্র মোদি বাহিনী ভোট প্রচারে শান দিয়ে চলেছেন, তাকেই কার্যত ভোঁতা করে দিল নির্বাচন কমিশন। আজ, বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ দফার ভোট প্রচারের শেষ দিন। তার আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডাকে চিঠি দিয়ে কমিশন নির্দেশ দিল, ‘আপনার তারকা প্রচারকদের সামলান। সমাজে বিভেদ তৈরি করে, এমন কোনও মন্তব্য যেন তাঁরা ভাষণে না করেন। জাতি, ধর্ম, ভাষার নিরিখে মেরুকরণ কোনওভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়।’ তবে নজর করার মতো বিষয় হল, ‘তারকা প্রচারক’ শব্দটি ব্যবহার করলেও নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বিরোধীদের বক্তব্য, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে কেন সতর্ক করা হবে না? বাধা কোথায়? কমিশন অবশ্য সতর্ক করার ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধী বা কংগ্রেসের কোনও নেতার নামও নেয়নি। সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে চিঠি দিয়ে শুধু জানানো হয়েছে, ‘আপনার তারকা প্রচারকরা যেন বিভ্রান্তকর মন্তব্য না করেন। প্রচারে বলা হচ্ছে, ভারতের সংবিধান ধ্বংস করে দেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গ তুলেও আর্থ সামাজিক বিভেদের কথা বলা হয়েছে। এমন প্রচার থেকে বিরত থাকুন।’


    কংগ্রেস তথা বিরোধীরা অবশ্য একে ‘ভারসাম্য বজায়’ হিসেবেই দেখছে। তাদের দাবি, এই কারণেই নাড্ডার পাশাপাশি খাড়্গেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে কংগ্রেস ছাপিয়ে দেশজুড়ে গোটা দিন প্রচারে থেকেছে গেরুয়া শিবিরের ধাক্কাই। কারণ, চিঠিতে কমিশন সরাসরি জানিয়েছে, ‘শুধু আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকাকালীনই নয়, ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন সব সময়ই সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই দলের তারকা প্রচারকদের শালীনতা বজায় রাখতে বলুন। তাঁরা যেন আরও দায়িত্ববান হন।’ নাড্ডাকে কমিশন আরও জানিয়েছে, ‘কোনও প্রচারকের জন্য সমাজে ঘৃণা বা উত্তেজনা যাতে তৈরি না হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব আপনার।’


    লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম, তথা শেষ দফার ভোট ১ জুন। অর্থাৎ প্রচারের ক্ষেত্রে হাতে আর আটদিন। তাই বিরোধীরা সাফ বলছে, কমিশন অনেক দেরিতে ‘রেসপন্ড’ করেছে। বিরোধীরা কমিশনের গায়ে যে ‘মূক’ তকমা সেঁটে দিয়েছিল, সেটাই খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তা না হলে এতদিন ধরে হিন্দু-মুসলমান ইস্যু তুলে নরেন্দ্র মোদি মন্তব্য করে যাওয়ার পরও কেন ব্যবস্থা নেয়নি তারা? গত ২১ এপ্রিল থেকে কমিশনকে ১১টি চিঠি দিয়েছে কংগ্রেস। মাঝে ২৫ এপ্রিল শুধু নাড্ডার কাছে জবাব চেয়ে নোটিস দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু ৯৬ ঘণ্টাতেও উত্তর দিতে পারেননি বিজেপি সভাপতি। সেই জবাব ই-মেলে কমিশনে পৌঁছেছে ১৩ মে। এবারের চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, ওই উত্তরে খুশি হয়নি তারা। তাই তারকা প্রচারকদের সামলানোর নির্দেশ দিয়ে চিঠি। প্রচার শেষের সাতদিন আগে।
  • Link to this news (বর্তমান)