• হাতি পিষে দিল একরত্তির মা-কে! এলাকায় শোকের ছায়া...
    ২৪ ঘন্টা | ২৪ মে ২০২৪
  • প্রদ্যুৎ দাস: হাতির ক্রোধে পরে মাতৃ হারা হয়েছে ছোট্ট খোকন। ইলেকট্রিক ফেন্সিং ক্ষেপিয়ে তুলছে হস্তিকুলকে, অভিমত প্রবীণ বনবন্ধুর।উত্তরের বিশেষত জলপাইগুড়ি জেলায় বন্য প্রাণ ও মানুষের সংঘাত এড়াতে বনবিভাগের আধুনিক ব্যবস্থাকেই কার্যত দায়ী করলেন বৈকুণ্ঠপুর। সেখানের বনাঞ্চল লাগোয়া মোরঙ্গা ঝোরা গ্রামের প্রবীণ নাগরীক তথা দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ফরেস্ট প্রটেকশন কমিটির সদস্য থাকা কালু রায়, এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আগে জঙ্গল আর জনপদের মাঝে ছিল এলিফেন্ট ট্রেনজ বা গভীর নালা, কিন্তু যেদিন থেকে হাতির চলাচল আটকাতে লাগানো হল ইলেকট্রিক ফেন্সিং সেই থেকেই বেড়ে গেল হাতির ক্রোধ, বিদ্যুতের শক লাগার পরেই ক্ষেপে যায় হস্তিকূল, হানা দেয় গ্রামে।'

    বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চলের একটি বড় অংশ জুড়ে গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। সেখানকার মানুষ জীবন জীবিকার তাগিদে একদিকে করে চলেছে চাষবাস থেকে অন্যান্য কৃষি ভিত্তিক নানান কর্মকাণ্ড। অপরদিকে ক্রমশ জঙ্গলে খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব মেটাতে বনাঞ্চল লাগোয়া জনপদমুখী হচ্ছে হাতি সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণ, এই কারণেই বাড়ছে সংঘাত।সম্প্রতি এই অঞ্চলের নধাবাড়ি গ্রামে ঘরের পাশেইই শুকনো ডাল পালা জোগাড় করতে গিয়ে হাতির মুখোমুখি হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর পঁচিশের বিউটি রায়। মাতৃ হারা হয়েছে দুধের শিশু খোকন। আজও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামলেই হাতির আগমনের ভয়ে নিঃস্তব্ধ হয়ে যায় গ্রাম, শুধু ভেসে আসে সদ্য মাতৃ হারা খোকনের কান্নার আওয়াজ।হাতির আক্রমণে দিশেহারা আরেক গৃহবধূ রোহিনী রায়, বলেন, 'রাত হলেই ভয়ে ঘরের মধ্যে পরিবার নিয়ে আতঙ্কে কাটে সময়। কারণ যতদিন যাচ্ছে বাড়ছে হাতির রাগ, বন বিভাগকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি, দিনকয়েক আগেই আমার এক আত্মীয়কে মেরেছে হাতি।'প্রসঙ্গত, হাতিতে এই মুহূর্তে নাজেহাল ঝাড়গ্রাম। ভোটের দিন এবং তার আগের দিন হাতিকে সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা অবশ্য নেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে বনঞ্চল চারটি ডিভিশনে বিভক্ত। এই চার ডিভিশনে প্রায় ১০০-র কাছাকাছি হাতি অবস্থান করছে এই মুহূর্তে। এর মধ্যে শুধু ঝাড়গ্রাম ডিভিশনেই রয়েছে ৭৩টি হাতি। খড়গপুর ডিভিশনে ২২টি। বাকি ২/৩ টি করে মেদিনীপুর এবং রূপনারায়ণ ডিভিশনে।হাতির গতিবিধি অনুযায়ী, ঝাড়গ্রাম ডিভিশন ইতিমধ্যে ১৪০টি বুথকে সেনসিটিভ চিহ্নিত করেছে। বাকি তিনটি ডিভিশনে সেনসিটিভ বুথের সংখ্যা ২০০-র বেশি। জঙ্গল-লাগোয়া এই সমস্ত বুথগুলিতে থাকছে বিশেষ নজরদারি। রেঞ্জ অনুযায়ী ভাগ করে সেই সমস্ত রেঞ্জে ৩ থেকে ৫টি করে মোবাইল টিম, ২টি করে হুলা টিম এবং ৩টি করে গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এর সঙ্গে ঐরাবতকে প্রয়োজন অনুসারে 'মুভ' করানো হবে।  
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)