নির্বাচনী বিজ্ঞাপন মামলা: ডিভিশন বেঞ্চ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পর সুপ্রিম কোর্টে গেল বঙ্গ বিজেপি
আনন্দবাজার | ২৫ মে ২০২৪
বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় বহাল রেখেছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এ বার সেই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল বিজেপি। দ্রুত শুনানির আর্জিও জানানো হয়েছে। তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, দ্রুত শুনানি হবে কি না, তা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত সোমবার বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিতর্কিত বিজ্ঞাপন আর কোনও সংবাদমাধ্যমে দেওয়া যাবে না। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি। এই মামলায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন বিচারপতি ভট্টাচার্য।
কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে বিজেপি। বুধবার সেই মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মামলাকারীকে ভর্ৎসনা করেন। তাঁর কড়া মন্তব্য, যে কোনও বিজ্ঞাপনের একটা লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। এখানেই তিনি থেমে থাকেননি। প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে আরও বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয় আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ ভাবে পোস্টার, ব্যানার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি, বিমানবন্দরে যদি যান, দেখবেন সেখান থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকতে পারে।’’
সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে হস্তক্ষেপ করেনি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে তিনি জানিয়েছিলেন, যদি মামলাকারী চান, সিঙ্গল বেঞ্চে গিয়ে নির্দেশ প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনার আর্জি করতে পারবেন। দেখা গেল, বিজেপি সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন না করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল।
সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিজেপির জোড়া বিজ্ঞাপনে আপত্তি তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। বিজেপির যে দুই বিজ্ঞাপনে তৃণমূল আপত্তি করেছে, তার একটিতে ‘দুর্নীতির মূল মানেই তৃণমূল’ এবং অন্যটিতে ‘সনাতন বিরোধী তৃণমূল’ স্লোগান ছিল। এই স্লোগানেই রাজ্যের শাসকদলের প্রধান আপত্তি। জোড়াফুল শিবিরের বক্তব্য, যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে ‘সনাতন বিরোধী’ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে, তা নিয়মবিরুদ্ধ এবং সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শুধু তা-ই নয়, রাজ্য সরকারকে যে ভাবে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে দাবি করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর, বেঠিক এবং অবমাননামূলক বলেই মনে করছে তৃণমূল। বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলাও করে তারা।