কবি নজরুল ইসলামের সঙ্গে নাড়ির যোগ ছিল বহরমপুরের। তাঁর মূর্তি নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।
পুরনো কান্দি বাস স্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম সরণি। খানিকটা দূরেই রয়েছে বহরমপুর মানসিক হাসপাতাল, যেটি ব্রিটিশ আমলে বহরমপুর জেল ছিল। সেখানেই বন্দি ছিলেন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম। প্রায় ১৯ বছর আগে বহরমপুর শহরের এমনই জায়গায় কাজী নজরুল ইসলামের মূর্তি স্থাপন করেছিল বহরমপুর পুরসভা। গত মার্চ মাসে সেখান থেকে কাজী নজরুল ইসলামের মূর্তিটি সরিয়ে ব্যারাক স্কোয়ারের পাশে মোড়ের মাথায় বসিয়েছে পুরসভা এবং বহরমপুর নজরুল কমিটি। যা নিয়ে নজরুল ইসলামের জন্মদিনের মুখে বহরমপুর শহর জুড়ে হইচই শুরু হয়েছে। কবির মূর্তি পুরনো জায়গায় পুনরায় স্থাপনের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীর তাঁর চিঠিতে বলেন, মূর্তিটি আগে যেখানে ছিল তার সঙ্গে ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই তা সরানোয় বাঙালি মনন আহত হবে।
আজ কবির জন্মদিবসে পুরনো কান্দি বাস স্ট্যান্ডের যে জায়গায় কবির মূর্তি ছিল সেখানে শহরের কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকর্মী, চিত্র শিল্পিসহ অনেকেই জড়ো হবেন। পুরনো জায়গায় কবির মূর্তি পূনরায় স্থাপনের দাবিতে তাঁরা সেখানে কর্মসূচি করবেন।
যদিও বহরমপুর পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরনো কান্দি বাস স্ট্যান্ডে বাজারের মধ্যে কবির মূর্তি বসানো হয়েছিল। সেই জায়গায় কর্মসূচি করতে অসুবিধা হচ্ছে বলে বহরমপুর নজরুল কমিটির পক্ষ থেকে পুরসভার কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মতো বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ারের পাশে জেলা জজ ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বাংলোর মাঝে মোড়ের মাথায় সেই মূর্তি এনে বসানো হয়েছে। জায়গাটি জনবহুলও বটে। বহরমপুরের পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কান্দি বাসস্ট্যান্ড বাজারে মধ্যে কর্মসূচি করতে সমস্যা হত বলে নজরুল কমিটির পক্ষ থেকে অন্যত্র ভাল জায়গায় কবির মূর্তি বসানোর আবেদন করা হয়েছিল। তাদের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা সেখান থেকে মূর্তি সরিয়ে ব্যারাক স্কোয়ার লাগোয়া রাস্তার মোড়ের মাথায় বসিয়েছি।’’
বহরমপুর নজরুল কমিটির সভাপতি তথা প্রাক্তন অধ্যাপক আবুল হাসনাত বলেন, ‘‘বহরমপুরে প্রথম কবি নজরুল ইসলামের মূর্তি বসানো হয়েছিল পুরনো কান্দি বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে আমরা অনুষ্ঠানও করতাম। কিন্তু বাজার হওয়ার কারণে অনুষ্ঠান করতে সমস্যা হত। সে কথা ভেবে আমরা সেখানে থেকে সরিয়ে ভাল জায়গায় মূর্তি বসানোর আবেদন জানিয়েছিলাম। বর্তমানে যেখানে মূর্তি বসানো হয়েছে সেই জায়গাটি পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন এবং জনবহুল। সে কারণে পুরসভা এবং বহরমপুর নজরুল কমিটি যৌথভাবে মূর্তিটি এখানে বসিয়েছে। যেহেতু বিতর্ক দেখা দিয়েছে আমরা নজরুল কমিটি বসে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’