• ট্রলি কোথায়? ওয়ার্ড বদল কোলে-পিঠেই
    আনন্দবাজার | ২৫ মে ২০২৪
  • শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা। সাফাইয়ে ব্যস্ত কর্মীরা। সে সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে পিঠে বছর কুড়ির যুবককে নিয়ে বেরিয়ে আসছেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব। যুবকের মাথায় ব্যান্ডেজ, হাতে স্যালাইনের চ্যানেল। রোগীকে পিঠে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন? হাঁটতে হাঁটতেই হবিবপুরের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি সুভাষ মণ্ডল বলেন, “মোটরবাইক দুর্ঘটনায় ছেলের মাথা ফেটেছে। বুলবুলচন্ডী গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে মালদহ মেডিক্যালে এসেছি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা ৩০ মিটার দূরের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে যেতে বলেন। দশ মিনিট দাঁড়িয়েও ট্রলি না পেয়ে পিঠে করে ছেলেকে সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।”

    রোগীকে এ ভাবে পিঠে করে নিয়ে যাওয়ার এই ছবিটা নতুন নয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দাবি রোগীর অন্য আত্মীয় পরিজনদের। কালিয়াচকের বাসিন্দা রোগীর এক আত্মীয় দিলবর শেখ বলেন, “জরুরি বিভাগের সামনে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকুন। রোগীকে কেউ কোলে, কেউ পিঠে বা কাঁধে করে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, ট্রলিতে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার আশায় বসে থাকলে, বসেই থেকে যেতে হবে। ট্রলি আর পাবেন না।” কেন? ট্রলিতে চাপিয়ে রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে হলে টাকা গুনতে হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের একাংশ ট্রলির কৃত্রিম ভাবে সঙ্কট করে রাখেন। ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের একাংশ রোগীর আত্মীয়দের থেকে ১০০-১৫০ টাকা দাবি করেন, দাবি তাঁদের বড় অংশের।

    যদিও হাসপাতালে ট্রলির ঘাটতি নেই বলে জানান কর্তৃপক্ষ। জরুরি বিভাগের জন্য পাঁচটি এবং ওয়ার্ড-পিছু গড়ে চার-পাঁচটি করে ট্রলি মজুত রাখা হয়। ট্রলি ঠেলে রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, “জরুরি বিভাগে অস্থায়ী কর্মী তিন-চার জন। এক সঙ্গে একাধিক রোগী হাজির হলে সমস্যা তৈরি হয়।” টাকা নেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি তাঁরা। পাশাপাশি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেডিক্যালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ বর। তিনি বলেন, “রোগীর আত্মীয়দেরতরফে ট্রলি ঠেলার জন্য টাকা চাওয়ার কোনও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযোগ পেলে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রলিও পর্যাপ্ত। প্রয়োজনে, ট্রলি সংখ্যা বাড়ানো হবে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)