• ‘ইন্ডিয়া’র জন্যই সব ভোট সুজনকে, যৌথ সভায় ডাক অধীরের
    আনন্দবাজার | ২৫ মে ২০২৪
  • রাজ্যে এ বার যে গোটাদশেক লোকসভা আসন বাছাই করে বিশেষ নজর দিয়েছে সিপিএম, তার মধ্যে অন্যতম দমদম। সেই কেন্দ্রের প্রার্থী, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রচারে কোমর বেঁধে নেমেছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। দমদম কেন্দ্রের নানা এলাকায় শুক্রবারই দিনভর প্রচারে দেখা গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেসের তরুণ নেতা আলি ইমরান রম্‌জ (ভিক্টর), শুভঙ্কর সরকারদের। তাঁরা এক সুরেই আহ্বান জানালেন ভোট ‘লুট’ ঠেকিয়ে সুজনকে এ বার দমদম থেকে লোকসভায় পাঠানোর।

    মুর্শিদাবাদে এ বার লোকসভা নির্বাচনে পাশাপাশি কেন্দ্রে লড়েছেন অধীর ও সেলিম। ওই জেলায় অধীর-সেলিম জুটিকে একসঙ্গে প্রচারেও দেখা গিয়েছে। তার পরে এ দিন রাতে কলকাতা সংলগ্ন কামারহাটিতে সুজনের জন্য এবং পরে সিঁথির মোড়ে সুজনের পাশাপাশি বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্যের সমর্থনে একসঙ্গে সভা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। তার আগে পানিহাটির অমরাবতী মাঠে সভায় ছিলেন অধীর এবং মীনাক্ষী। নিউ ব্যারাকপুরে আলাদা করে রোড-শো ছিল মীনাক্ষীর। আবার পানিহাটি, কামারহাটি এলাকায় রোড-শো করেছেন ইয়েচুরিও।

    কামারহাটির সভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকদের উদ্দেশেও অধীর আহ্বান জানিয়েছেন সুজনকে ভোট দেওয়ার। সুজনকে ‘আমাদের উভয়ের প্রার্থী’ বলে উল্লেখ করে প্রদেশ সভাপতির বক্তব্য, ‘‘বিরোধী ভোট এককাট্টা হলে বিজেপির বিপদ হবে, এই তো সোজা অঙ্ক! সেই চেষ্টা হওয়ার পরে প্রথমে শিবির বদলালেন নীতিশ কুমার। তার পরে তৃণমূল নেতাদের যেই সিবিআই-ইডি ডাকতে শুরু করল, দিদি চলে গেলেন রাজভবনে। সেখানে মোদীজি’র সঙ্গে কথা হল। বেরিয়ে এসে বললেন, রাজনীতির আলোচনা হয়নি। তার পরেই বললেন, বংলায় আমি ‘ইন্ডিয়া’ জোটে নেই। এখন আবার বাঁচতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে ফিরতে চাইছেন!’’ এই সূত্রেই অধীরের সংযোজন, ‘‘উনি যদি ‘ইন্ডিয়া’তে ফিরতে চান, তা হলে ওঁর কর্মীদের বলুন, সব ভোট সুজন চক্রবর্তীকে দিতে!’’ বারবার এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে মানুষ বারাবার তৃণমূলকে জিতিয়েছেন কিন্তু তৃণমূল কী দিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেই অধীরের দাবি, ‘‘ভোট আসবে, সাধুদের মিছিল হবে। এক দল সাধুদের আক্রমণ করবে। এক দল সাধুদের রক্ষা করার কথা বলবে। পুরোটাই ভোটের জন্য। সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা।’’

    একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিমও অভিযোগ করেছেন, ‘‘রামকৃষ্ণ মিশন এবং নানা কথা টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন, পুরোটাই নরেন্দ্র মোদীকে হাতিয়ার দেওয়ার জন্য। তাঁরা বিভাজন চান।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘হাওড়া থেকে যাঁরা দিল্লির ট্রেনে ওঠেন, তাঁরা সকলেই দিল্লি যান না। পথে অনেকে নেমে যান। তৃণমূল নেত্রীও নেমে গিয়ে এখন আবার উঠতে চাইছেন!’’ সেলিমের কটাক্ষ, ‘‘বিনা রিজ়ার্ভেশনে এই রকম করতে থাকলে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেবে টিকিট পরীক্ষক!’’

    দমদমের পাশাপাশি যাদবপুর কেন্দ্রেও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছে সিপিএম। সেখানেও সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের সমর্থনে ইয়েচুরি ও অধীরের সমাবেশ করার কথা। ইতিমধ্যেই সুকান্ত সেতুর মোড়ে সভা করে ইয়েচুরি আহ্বান করেছেন, ‘‘দেশ বাঁচাতে বামপন্থীদের জয়ী করুন।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)