• রিমাল ধেয়ে আসছে ১৩৫ কিমি বেগে! গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির মন্দির নিরাপদ তো'
    ২৪ ঘন্টা | ২৫ মে ২০২৪
  • নকিব উদ্দীন গাজি: কথায় আছে, নদীর পাড়ে বাস, ভাবনা বারো মাস! প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের মাথায় হাত! এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। তাতেই আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের মনে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হতে পারে সুন্দরবনে। যার প্রভাব পড়বে গঙ্গাসাগরেও। তাই চিন্তায় গঙ্গাসাগরবাসী।

    আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, রিমাল আছড়ে পড়তে পারে গঙ্গাসাগর এলাকায় আর সেই মতো শনিবার সকাল থেকেই গঙ্গাসাগর জুড়ে চলছে মাইকিং, প্রচার হচ্ছে সতর্কবার্তা, খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। প্রশাসনিক পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত স্তরে নেওয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। কোস্টাল এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকার জন্য যেসব ব্যবস্থা করা হয়েছে তার তদারকি করছে গঙ্গাসাগর ব্লক। ত্রাণ নিয়েও তৈরি থাকা হয়েছে। খোলা হয়েছে ফ্লাড সেন্টার। থাকছে শুকনো খাবার, ওষুধ। দুর্বল বাঁধগুলি দ্রুত মেরামতির কথা বলা হয়েছে সেচ দফতরকে। আগের ঝড়ের অভিজ্ঞতা থেকে প্রশাসন রিমাল মোকাবিলায় যথেষ্ট তৎপর।প্রতিবারই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পাথরপ্রতিমা, জি প্লট নামখানা, মৌসুনি ঘোড়ামারা গঙ্গাসাগর একাধিক জায়গার দুর্বল নদীবাঁধ ভেঙে এলাকায় জল ঢুকে পড়ে আর সেই জলে নষ্ট হয় চাষের জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি। ঝড় নিয়েই এই মুহূর্তে ভাবছে গোটা বাংলা, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। ঝড় নিয়েই মুহূর্তে-মুহূর্তে আসছে আপডেট। আর তাই নতুন করে আবারও আশঙ্কার মেঘ দেখছে নামখানা-নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষজন।এর আগে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মুড়িগঙ্গা নদীর এক কিলোমিটার নদীবাঁধ ভেঙেছিল। শাল বল্লা দিয়ে প্রাথমিক ভাবে মেরামতি করা হলেও পাকা নদীবাঁধ হয়নি। এলাকার মানুষের দাবি, প্রতিবারেই আশ্বাস মেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিন্তু পাকা নদী বাঁধ কোথায়? তাই রাতের ঘুম উড়েছে এখন তাঁদের। নামখানার দেবনগর নাদাভাঙা, মৌসুনি, গঙ্গাসাগরে একই অবস্থা। সর্বত্র নদীবাঁধ ভাঙার আতঙ্কে এখন প্রহর গুনছে এলাকার মানুষ।গতকাল আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, রবিবার, ২৬ মে মাঝরাতে সাগরদ্বীপ থেকে বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝে সুন্দরবনের আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল'। তাই দুর্যোগের আশঙ্কা সুন্দরবনের উপকূলেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় এবং প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা। জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্রের জল উপচে পড়তে পারে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় অর্থাৎ, ল্যান্ডফলের সময়ে এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, যেটা আজ বলা হয়েছে আর একটু বেশি-- ১৩৫ কিমিও হতে পারে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাতেই। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই সুন্দরবনবাসী উদ্বিগ্ন। ভারতের মৌসম ভবনও জানিয়েছিল, বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর আইল্যান্ডের মাঝে ল্যান্ডফল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এর অর্থ, সুন্দরবন এলাকাতেই ঘূর্ণিঝড় আছে পড়তে পারে রবিবার মাঝরাতে। আর এর জেরে শনিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া রবিবার এবং সোমবারও।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)