‘রেমাল’ মোকাবিলায় প্রস্তুত রেল, বিভিন্ন স্টেশনে পরখ করে দেখা হয়েছে হোর্ডিং, খুলেও ফেলা হল
আনন্দবাজার | ২৫ মে ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর জন্য আগেভাগেই তৈরি পূর্ব রেল। উপকূল সংলগ্ন স্টেশনগুলিতে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেখান থেকে সরানো হয়েছে বেশ কিছু হোর্ডিং, ব্যানার। স্টেশনের ছাউনি মেরামতেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ ভাবে তৈরি শিয়ালদহ শাখাও। শনিবার জরুরি বৈঠকে বসেন শিয়ালদহের ডিআরএম দীপক নিগম। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী রেল মনে করছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সব থেকে বেশি পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, হাসনাবাদ স্টেশনে। সেখানেও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য থাকছেন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেলিকম কর্মীরা।
রবিবার গভীর রাতে সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায়। সঙ্গে ভারী বৃষ্টি। এই পরিস্থিতিতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পূর্ব রেল। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পূ্র্ব রেলওয়ের সমস্ত ডিভিশন— হাওড়া, শিয়ালদহ, মালদহ, আসানসোল বিভাগ সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনে চলবে। যেমন এর আগে ঘূ্র্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে মেনে চলেছিল। শনিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চালু থাকবে আপৎকালীন এবং ডিভিশনাল কন্ট্রোল রুম। রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল, সেফটি এবং অপারেটিং বিভাগের আধিকারিকেরা থাকবেন এই কন্ট্রোল রুমে। সময়ে সময়ে তাঁরা ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম), অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (এডিআরএম) এবং অন্য প্রবীণ আধিকারিকদের পরিস্থিতির খবর দেবেন। স্টেশনের ভিতরে এবং বাইরে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংগুলি শক্ত করে লাগানো রয়েছে কি না, পরখ করে দেখছেন রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বাণিজ্য বিভাগের আধিকারিকেরা। প্লাটফর্মের ছাউনি পরখ করে দেখা হচ্ছে।
রেলের লাইন, সেতু, ফুটব্রিজ ঝড়ে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা দেখা হচ্ছে। বার বার টহল দিচ্ছেন রেলের আধিকারিক, কর্মীরা। পরিস্থিতি বুঝে ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবেন ডিআরএম। তার আগে কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচন করবেন। ঝড়ের খবর পেলেই বন্ধ করে দেওয়া হবে বিদ্যুৎ সংযোগ। মাঝপথে ট্রেন থেমে গেলে প্রয়োজনে টাওয়ার কার দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রেল। স্টেশনে পরিস্থিতি নিয়ে চলবে ঘোষণা। বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে শিয়ালদহ শাখা। লাইনে জল জমলে তা নিষ্কাশনের জন্য রয়েছে পাম্পের ব্যবস্থা। শিয়ালদহ স্টেশনে রয়েছে আপৎকালীন আলোর ব্যবস্থা। পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে চালকদের। ডিজ়েল চালিত ইঞ্জিনের চালকদের শিয়ালদহ, দমদম, বারাসত, নৈহাটি, রানাঘাটের মতো স্টেশনে রবিবার সকালে থাকতে বলা হয়েছে। সর্বোপরি, চালকদেরও সতর্ক করা হয়েছে, যাতে লাইনে কিছু আশঙ্কাজনক দেখলেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন তাঁরা।