ভোটের মুখে ভাঙড়ের দুই এলাকায় তৃণমূল-আইএসএফ গোলমালের অভিযোগ উঠল। ভাঙড় থানার মরিচা গ্রামে এক আইএসএফ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, উত্তর কাশীপুর থানার দক্ষিণ বামুনিয়া এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইএসএফের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে মরিচা গ্রামে আবদুল্লাহ শেখ নামে এক আইএসএফ কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই গ্রামের বাসিন্দা রাতে দলীয় কর্মসূচি সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় তৃণমূলের লোকজন তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। আইএসএফের দাবি, রড দিয়ে মেরে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান আবদুল্লাহ। মারা গিয়েছেন ভেবে হামলাকারীরা তাঁকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর থেকে পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।
খবর পেয়ে রাতেই পৌঁছন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী নুর আলম খান। তিনি বলেন, “ভাঙড়ে শাসক দল এলাকা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে চাইছে। সব জায়গাতেই আমাদের কর্মীদের উপরে আক্রমণ করা হচ্ছে। এ দিনও আমাদের দলীয় কর্মীকে পিটিয়ে খুন করতে চেয়েছিল। পুলিশকে বলেছি, অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ভাঙড় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লার অবশ্য দাবি, “এটা সম্পূর্ণ পারিবারিক বিষয়। তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ হয়নি।
রাতেই দক্ষিণ বামুনিয়ায় তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় এবং এক তৃণমূল কর্মীর মুদি দোকানে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির আইএসফের দিকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত ১১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান স্থানীয় তৃণমূল কর্মী মিজানুর রহমান। রাতে খবর পান, তাঁর দোকান ও পাশেই দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তৃণমূলের দাবি, কার্যালয়ে থাকা প্লাস্টিকের চেয়ার, এলইডি টিভি, ফ্লেক্স, ব্যানার পুড়ে গিয়েছে। মুদির দোকানের মালপত্রও পুড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তশুরু হয়েছে।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান সওকাত। তিনি বলেন, “রাতের অন্ধকারে চোরের মতো আমাদের দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে আইএসএফ। আমাদের এক কর্মীর দোকানেও আগুন দিয়েছে। পুলিশকে বলব, অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরব্যবস্থা করতে।”
অভিযোগ উড়িয়ে যাদবপুর কেন্দ্রের আইএসএফ প্রার্থী নুর আলম খান বলেন, “তৃণমূল নিজেরাই নিজেদের কার্যালয় ও দোকানে আগুন লাগিয়েছে। এর আগেও ফুলবাড়ি এলাকায় ওদের এক জনের দোকানে আগুন লাগিয়ে আমাদের কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছিল। ভোটের আগে আমাদের লোকজনকেফাঁসাতে চাইছে।”