• ধেয়ে আসছে রেমাল, বই বাঁচাতে কী ভাবছে বইপাড়া'
    আজকাল | ২৭ মে ২০২৪
  • রিয়া পাত্র২০২০-এর মে মাস। ভয়াবহ ঝড়, ভেসে যাওয়া কলেজস্ট্রিট, ভিজে চুপসে যাওয়া হাজার হাজার বই, আর বিক্রেতার হতাশ মুখ। আমফানের তাণ্ডবের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছিল গোটা বইপাড়া। কফি হাউসের সামনের রাস্তা, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলুটোলা লেনের রাস্তায় জলথইথই অবস্থা। সেই জলে ভাসছিল বই। ভাসছিল স্বপ্ন, রুটি-রুজি। সেই ছবি পুরনো হলেও, ফিকে হয়নি এখনও। ২০২৪ এর মে মাসেও ফের একই আশঙ্কা। ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রবিবার রাতেই তার ল্যান্ডফলের আশঙ্কা। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এই পরিস্থিতি ফের ভাবাচ্ছে বইপাড়াকে।কলেজ স্ট্রিটের প্রতিক্ষণ বইচাঘরের একটি বার্তা ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আমফানের বিপুল ক্ষতির কথা মনে করিয়ে তারা জানিয়েছে, দুর্যোগকালে সূর্য সেন স্ট্রিট এবং সংলগ্ন এলাকার বইবিপণিগুলি, যারা স্থানাভাবের কারণে বইয়ের স্টক নিরাপদ স্থানে রাখতে পারছে না, তারা দু' দিনের জন্য প্রতিক্ষণ বইচাঘরে বইয়ের স্টক রাখতে পারে। নিজেদের বই সুরক্ষিত রাখতে কী ভাবছে প্রকাশন সংস্থাগুলি? দে'জ-এর শুভঙ্কর দে জানালেন, পূর্বাভাস থাকায় এবং হাতে সময় থাকায় সকলেই যতটা সম্ভব উঁচু জায়গায় বই সরিয়ে রেখেছেন। অল্প বৃষ্টিতেই কলেজস্ট্রিটে এক হাঁটু জল। সেকথার রেশ টেনে তিনি জানালেন, আমফানের সময়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাঁদের বিদ্যাসাগর টাওয়ারের বিপণির বই। তবে এবার, পূর্বাভাস পাওয়ায় প্রকাশক, বিক্রেতা সকলেই যতটা সম্ভব বই সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেছেন। করোনাকাল, লকডাউন হওয়ায় আমফানের সময় সেই সুযোগ মেলেনি। সেকথাই বললেন পত্রভারতীর কর্ণধার এবং পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, এবার সামর্থ্যমত সকলেই চেষ্টা করছেন সবকিছু গুছিয়ে রাখার। আমফানের সময় গিল্ড সহায়তা করেছিল বইপাড়ার। এখনই এসব নিয়ে ভাবতে রাজি নন সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে। বললেন, 'চাই না এরকম কিছু হোক। গতবার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি হলে পাশে দাঁড়াবে গিল্ড।' সেকথা বললেন ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ও। জানালেন, এখনও আলোচনা না হলেও, দুর্যোগ বইপাড়ায় প্রভাব ফেললে, ক্ষয়ক্ষতি হলে পাশে থাকবে গিল্ড।  তবে আগাম সতর্কতায় কতটা সামলানো প্রকৃতির রোষ? সেটাই ভাবাচ্ছে দীপঙ্কর দত্তকে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বইয়ের দোকান তাঁর। দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বললেন, 'আমার দোকান ফুটপাথে, খুব নিচু জায়গা। খুব ঝড় বৃষ্টি হলে কী হবে জানি না। আমফানের সময় কিছু করতে পারিনি। গাছের ডালে ভেঙে গোডাউনের চাল ভেঙে গিয়েছিল। তাতে জল ঢুকে বই ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার সময় পেয়ে বইপত্র উঁচুতে রেখেছি। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হাত থাকে না। ভয় সেই কারণেই বাড়ছে।' বইপত্র উঁচুতে সরিয়ে রেখেছে বৈভাষিকও। তবে আতঙ্ক কাটছে না কারও। ছোট দোকান যাঁদের ঝড়ে চাল উড়ে গেলে, কী করবেন তাঁরা?
  • Link to this news (আজকাল)