জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আইপিএলের (IPL 2024) শুরুর দিকে একেবারেই ছন্দ পাচ্ছিলেন না তিনি। সমালোচনার ঝড় উঠেছিল বিশ্ববন্দিত অজি পেসার মিচেল স্টার্ককে (Mitchell Starc) নিয়ে! সবাই একটাই কথা বলেছিল, যে বোলারের বায়োডেটায় আইপিএল খেলার সেভাবে অভিজ্ঞতাই নেই, তাঁর জন্য় আর যাই হোক ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করার তো কোনও মানেই হয়নি কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders)। লিগের শেষ পর্যায়ে স্টার্ক জ্বলে ওঠা শুরু করেন। ফুলকি থেকে তিনি দাবানল হয়ে ওঠেন। সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন তাঁর এত দাম! কেকেআরকে (KKR) ফাইনাল জিতিয়ে স্টার্ক হাসি মুখে একটাই বার্তা দিলেন। আজও বিশ্বের সেরা বোলারদের নাম উচ্চারিত হলে, তাঁর নামটিও সেই তালিকাতেই রাখতে হবে। আর কোনও উপায় নেই। ফাইনালে ১৪ রানে দুই উইকেট ও জোড়া ক্য়াচ নিয়ে হয়েছেন ম্য়াচের সেরা। পুরো আইপিএলে ১৪ ম্যাচ খেলে ১৭ উইকেট পাওয়া স্টার্ককে নিয়েই এখন আলোচনা। যদিও সমালোচকদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এখন। তাঁরাও মনে হয় স্টার্কের ফ্য়ান হয়ে গিয়েছেন।যে এসআরএইচ লিগের ম্য়াচে ২৮৭ রান করে টি-২০ ক্রিকেটে ইতিহাস লিখেছিল, তারাই রবিবার ১১৩ রানে গুটিয়ে যায়। আর এই রান ১১ ওভারের মধ্য়ে তাড়া করে কলকাতা নাইট রাইডার্স আট উইকেটে জিতে ঘরে তুলেছে তিন নম্বর আইপিএল ট্রফি। এবারের আইপিএলে সানরাইজার্সকে ভয়ংকর করে তুলেছিল তাদের ব্য়াটিং লাইন-আপ। বিশেষত দুই ওপেনার- ট্র্য়াভিস হেড ও অভিষেক শর্মা যে তাণ্ডবলীলা করেছিলেন, তা দেখে বাকি দলের বুকে কাঁপুনি ধরে গিয়েছিল। সেই ইন্দো-অজি জুটিকেই কেকেআর প্রথম ওভারেই ভেঙে দেয়। স্টার্ক প্রথম ওভার বল করতে এসেছিলেন। পঞ্চম ডেলিভারিতে তিনি অভিষেকের উইকেট ছিটকে দিলেন অসাধারণ আউট সুইংয়ে। যা দেখে অনিল কুম্বলে সোশ্য়াল মিডিয়ায় লিখলেন, তিনি আইপিএলের সেরা ডেলিভারি দেখে ফেললেন। এই ডেলিভারি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং চলবেও। এমনকী রাজ্য় পুলিশ এক্স হ্য়ান্ডেলে স্টার্কের সেই ডেলিভারির ভিডিয়ো পোস্ট করে ক্য়াপশন দিয়েছে, 'দাম তো শুনা হোগা'! শাহরুখ খানের ফ্য়ানরা জানেন, তাঁদের প্রিয় অভিনেতা বিভিন্ন সময়ে বড়পর্দায় বলেই এসেছেন, 'রাহুল, নাম তো শুনা হোগা'! সেটাই রাজ্য় পুলিস অন্য় মোড়কে পেশ করে হৃদয় জয় করে নিয়েছে নেটপাড়ার।এখন প্রশ্ন স্টার্ক এবার কী করবেন? অবশ্য়ই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে আমেরিকায় যাবেন। কিন্তু তারপর! খেলার পর স্টার্ক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'দেখুন আমি বিগত ৯ বছর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলাকেই প্রাধান্য় দিয়েছি। দেখতে অফ টাইমে আইপিএল খেলেছি। নিজের শরীরকে বিশ্রাম দিয়েছি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। এটাই করে এসেছি। এবার ভবিষ্যতের কথা ভাবার সময়ে এসেছে। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, আমার কেরিয়ার শেষের দিকে। যে কোনও একটা ফরম্য়াটে খেলা ছাড়তে পারি। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আসতে এখনও অনেক দেরি আছে। জানি না তখন এই ফরম্য়াটে খেলা চালিয়ে যেতে পারব কিনা! তবে আরও বেশি করে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট নিশ্চিন্তে খেলতে পারব। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে অসাধারণ একটা আইপিএল মরসুম কাটালাম। দেখতে গেলে উপকৃতই হলাম। অসাধারণ টুর্নামেন্ট, দুর্দান্ত সব প্লেয়ার। দারুণ সাফল্য় পেলাম। আগামী বছরের সূচি এখনও জানি না। তবে পরেরবার আইপিএল খেলার জন্য় মুখিয়ে থাকব। আশা করি বেগুনি-সোনালিতেই খেলব।' স্টার্ক যে আইপিএল মাতিয়ে দিলেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।