আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনকে ফোনে গালাগালি করা এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করল সুতি থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃত যুবকের নাম মহম্মদ আসানুজ্জামান। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বছর তিরিশের ওই যুবকের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের ইসলামপুর এলাকায়। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলা সুপার আনন্দ রায় বলেন, 'ধৃত যুবক কী উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সোমবারই ধৃত যুবককে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হচ্ছে।' প্রসঙ্গত -দু'দিন আগে রাজ্যের শ্রম দপ্তরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন অভিযোগ করেছিলেন বিগত কয়েকদিন ধরে তাঁকে একটি বিশেষ নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন করে ক্রমাগত গালিগালাজ এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জাকির হোসেন জানিয়েছিলেন- যেভাবে এবং যে ভাষায় তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাতে তিনি এবং তাঁর পরিবার সদস্যরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। জাকির হোসেন অভিযোগ করেছিলেন -বছর তিনেক আগে নিমতিতাতে স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। সেই ঘটনার এনআইএ তদন্ত শেষ হওয়া এবং সকল দোষীদের গ্রেপ্তারির আগে ফের একবার হুমকি ফোন কল পাওয়াতে যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূলের হেভিওয়েট এই বিধায়ক। জাকির হোসেনের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই সুতি থানার একটি বিশেষ দল তদন্ত নামে। তদন্তের শুরুতেই পুলিশ জানতে পেরেছিল ঝাড়খণ্ডের একটি নম্বর থেকে ফোন করে জাকির হোসেনকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান -রবিবার রাতে পুলিশের একটি দল ঝাড়খণ্ডের ইসলামপুরে অভিযান চালায়। সেখান থেকে বি টেক ইঞ্জিনিয়ার আসানুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের ওই আধিকারিক জানান -সম্প্রতি আসানুজ্জামানের কিছু মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। কী কারণে ওই যুবক জাকির হোসেনকে ফোন করে হুমকি দিয়েছিল পুলিশ তা জানতে পারলেও তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ্যে আনতে রাজি হয়নি। হুমকি কাণ্ডে অভিযুক্ত যুবকের কঠোর শাস্তি দাবি করে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন বলেন, 'কী কারণে ওই যুবক ফোন করে আমাকে হুমকি দিত পুলিশ তা তদন্ত করে দেখুক।' কোর্টে নিয়ে যাওয়ার পথে ধৃত ওই যুবক বলে, 'গত প্রায় দু'বছর ধরে আমি জাকির হোসেনকে ফোনে ম্যাসেজ করতাম। তাঁর সাথে কথা বলতে চেয়ে একাধিকবার ফোনও করেছি। কিন্তু কোনও দিন বিধায়ক আমার ফোন বা ম্যাসেজের উত্তর দেননি। তাই বিরক্ত হয়ে আমি তাঁকে গালাগালি করে ম্যাসেজ করেছিলাম।' যদিও তৃণমূল বিধায়ককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধৃত ওই ইঞ্জিনিয়ার।