• ন্যায় বিচার চান সন্তান হারা বাবা মায়েরা
    আজকাল | ২৮ মে ২০২৪
  • বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি:‌ দিল্লির গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালের মর্গের সাামনে প্রাণ হারানো শিশুদের বাবা মায়ের কান্না। কোনও শিশুর বয়স ১২ দিন, কারও বয়স ১০ দিন। মর্গের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়া অভিভাবকরা এখন চান ন্যায় বিচার। তাঁদের দাবি, যাঁদের গাফিলতিতে এতগুলো বাচ্চা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বিবেক বিহারের শিশু হাসপাতালের মালিক নবীন কিচি এবং দুর্ঘটনার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসককে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে তাতে ক্ষোভ কমেনি সন্তানহারা বাবা, মায়েদের। ১২ দিনের সন্তান হারিয়েছেন অঞ্জন। তিনি বলেছেন, ‘‌আমি জানি না। আমার এক বন্ধু আমায় খবর দেয়। হাসপাতাল বা পুলিশের তরফে খবর দেওয়া হয়নি। আমি হাসপাতালে ফোন করেছিলাম। তবে কোনও উত্তর পাইনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যাই। আমার মেয়ের বয়স মাত্র ১২ বছর। সে মারা গিয়েছে।’‌ তাঁর বক্তব্য, পুরো ঘটনার জন্য দায়ী বিবেক বিহারের বেবি কেয়ার সেন্টার। তারাই এখানে পাঠিয়েছে। তিনি সাংবাদমাধ্যমে বলেন, ‌‘‌সব শিশুর জন্য আমি ন্যায় বিচার চাই। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে আমি ন্যায়বিচারের আবেদন জানাচ্ছি।’‌ এদিন সকাল থেকে বিবেক বিহার বেবি কেয়ার সেন্টার এবং গুরু তেগ বাহাদুর হাসপাতালের সামনে জয়ামেত হন সন্তান হারা বাবা মায়েরা। অমিত শর্মা বলেন, ‘‌আমাদের সন্তান হারানোর যন্ত্রণা এখন পরিণত হয়েছে ক্ষোভে। আমাদের রাগের কারণ, আধিকারিকরা কোনও প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন না।’‌ আজ সকালে জিটিবি হাসপাতালে যান সহোদরার জেলা শাসক রিতিশা গুপ্তা। সেখানে অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। সন্তান হারা বাবা মায়েরা স্লোগান দেন, ‘‌আমাদের ন্যায় বিচার চাই।’‌ তারমধ্যে শিশুদের দেহ সনাক্ত করা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। বাবা মায়েদের ডিএনএ পরীক্ষা করে তবেই তাঁদের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, ঘটনার পর কয়েকজন শিশুকে গুপ্তা হাসপাতালেও পাঠানো হয়েছে। যাঁরা শিশুদের নিজেদের বাচ্চা বলে দাবি করেছেন, তাঁদের ডিএনএ পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরেই শিশুদের দেহ বাবা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। হাসপাতালের মালিক নবীন কিচি এবং দুর্ঘটনার সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আকাশকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে দিল্লি পুলিশ। আজ পুলিশে সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক বিধি গুপ্তা আনন্দ। তাঁদের তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। বিবেক বিহার থানায় ইতিমধ্যেই অপরের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা, অবহেলার কারণে মৃত্যু সহ নানান অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বিবেক বিহারের বেবি কেয়ার সেন্টারে যায় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। রিপোর্টে কমিশন জানিয়েছে, বেবি কেয়ার সেন্টারে কোনও আপৎকালীন প্রস্থান বা এমাজেন্সি এক্জিটের ব্যবস্থা ছিল না। সেখানকার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সচল ছিল না এবং ফায়ার এলার্ম ছিল না। কমিশন আরও জানিয়েছে, বেবি কেয়ার সেন্টারটি পুরোপুরি জাতীয় বিল্ডিং বিধি লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। আজ প্রশাসনিক বৈঠক করেন দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ। বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘‌গত মার্চে হাসপাতালটির রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। পশ্চিম পুরিতে এই মালিকের আরেকটি হাসপাতাল রয়েছে। এর আগে দুটি ভিন্ন ঘটনায় বেবি কেয়ার সেন্টারের মালিকের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।’‌ 
  • Link to this news (আজকাল)