• ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দুর্যোগ আসছে, রেড অ্যালার্ট ৩ রাজ্যে, প্রমাদ গুনছে আরও ৪ রাজ্যও
    আজ তক | ২৮ মে ২০২৪
  • আরও শক্তি ক্ষয় হয়েছে রিমালের। এবার গভীর নিম্নচাপ থেকে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে রিমাল। বর্তমানে শিলচর থেকে ১৭০ কিলোমিটার  পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে এই নিম্নচাপ। এর প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

    সময় যত এগোচ্ছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে  রিমেলের প্রভাব বাড়ছে।  ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। অরুণাচল, অসম এবং মেঘালয়েও অতি ভারী বৃষ্টির রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর এবং নাগাল্যান্ডে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু জায়গায় প্রবল ঝোড় হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকেও অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

    ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন ও বিমান পরিষেবা
    খারাপ আবহাওয়ার কারণে উত্তর-পূর্বের কিছু অংশে বিমান পরিষেবা ব্যাহত হবে। রিমাল-এর প্রভাবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অধীনে ট্রেন পরিষেবাগুলিও ব্যাহত হয়েছে। গুয়াহাটি বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সকালে জানিয়েছেন যে নির্ধারিত ফ্লাইট কার্যক্রম  বিঘ্নিত হয়েছে।

    উত্তর-পূর্বে কোথায় কতটা ক্ষতি?
    ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আইজলে একটি পাথরের খনি ধসে পড়ে। যেখানে অনেক শ্রমিক আটকা পড়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আইজলের কমিউনিটি কবরস্থান ভেঙে পড়ে। প্রবল ভূমিধসের কারণে মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। মেঘালয়ের তুরা, গারো পাহাড়ে গতকাল রাতে ঝড়ে অনেক বড় গাছ ভেঙে পড়েছে।

    অনেক জায়গায় প্রবল বৃষ্টি, স্কুল বন্ধ
    ঝড়ের প্রভাবে ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে স্কুল বন্ধ থাকবে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম এবং মণিপুরের অনেক অংশে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে, যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও বড় ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। IMD  উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু অংশের জন্য একটি লাল সতর্কতা জারি করেছে। ইতিমধ্যে ত্রিপুরায় দুটি NDRF টিম মোতায়েন করা হয়েছে। আসামে দুটি NDRF টিমও মোতায়েন করা হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা থেকে শিক্ষার্থীদের পরিত্রাণ দিতে মেঘালয়ের সব জেলায় আজ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

    বাংলায় মারা গেছে ৬ জন, ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার বাড়ি
    পশ্চিমবঙ্গে রিমালের প্রভাবে  ২৪টি ব্লক এবং ৭৯টি পৌরসভার ওয়ার্ডের প্রায় ২৯,৫০০টি বাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দুই হাজারেরও বেশি গাছ উপড়ে পড়ে এবং ১৫০০ টিরও বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে যায়। প্রাথমিক মূল্যায়ন ইঙ্গিত করেছে যে ২৭ হাজারটি ঘর আংশিক এবং ২,৫০০০টি সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    উত্তরবঙ্গে এখনও বৃষ্টি
     হাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার কলকাতা-সহ দক্ষিণের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোথাও কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি। বৃষ্টির সঙ্গে চলতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। বুধ থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণের সব জেলাতেই হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তবে জেলার সব জায়গায় বৃষ্টি হবে না। বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আগামী রবিবার আবার দক্ষিণের সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে।  এদিকে মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে। মঙ্গলবার  উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত উত্তরের সবকটি জেলাতেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায়। আর ভারী  থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায়। বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

    বাংলাদেশেও রিমালের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে
    ঘূর্ণিঝড় রিমাল বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছানোর পর অন্তত ১০ জন মারা গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছে। রিমাল যখন উপকূলে আঘাত হানে, তখন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার (কিমি) বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় এবং শত শত গ্রাম প্লাবিত হয়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে যে সোমবার সকালে 'রিমাল' কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৮০ থেকে ৯০কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছিল। রবিবার রাতে উপকূলে আঘাত হানে  ঘূর্ণিঝড়।
  • Link to this news (আজ তক)