ঘূর্ণিঝড় রেমালের বড় কোনও প্রভাব পড়েনি ঠিকই বীরভূমে। তবে, সোমবার দিনভরের বৃষ্টিতে পথে বেরিয়ে নাকাল হয়েছেন বহু মানুষ। দুর্যোগের কারণে এ দিন সকাল থেকে শিয়ালদহ ও হাওড়ায় বহু ট্রেন বাতিল হয়েছিল। যার কারণে নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে জেলার অফিস যাত্রীরা বাসের উপরে ভরসা করেছিলেন। কিন্তু, বৃষ্টিতে রাস্তায় বাস অনেক কম থাকায় দিনভর ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাঁদের। বাস মালিক সংগঠনের বক্তব্য, এ দিন যাত্রী কম হবে জেনেই বাস কম নেমেছে পথে।
বাস মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুরের জামবুনি বাসস্ট্যান্ড থেকে হাতেগোনা সরকারি বাস চললেও সিউড়ি, কির্ণাহার, লাভপুর, বহরমপুর, দুর্গাপুর, আসানসোল সহ বিভিন্ন রুটের বেসরকারি বাস এ দিন রাস্তায় নামতে কার্যত দেখা যায়নি। যে বাসগুলি চলেছে, সেগুলিও অনেক দেরিতে চলায় দুর্ভোগ বাড়ে যাত্রীদের। রামপুরহাটে অন্যান্য দিন যেখানে দৈনিক ১৫০- ১৮০টি বেসরকারি বাস চলে থাকে, এ দিন সেখানে ৫০-৬০টি বাস চলেছে। স্বাভাবিক ভাবেই ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দুর্যোগের কারণে যাত্রী খুব একটা না থাকায় বাস কম চলেছে।’’
সপ্তাহের প্রথম দিন অনেকেই নানা কাজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। কিন্তু, এদিন বহু ট্রেন বাতিল থাকায় তাঁদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। সকাল থেকে বহু যাত্রীকে বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকে বাস না-পেয়ে বাধ্য হয়ে টোটো ও ভ্যানে করে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। সুযোগ বুঝে টোটো ও ভ্যান চালকেরা বেশি ভাড়াও হেঁকেছেন বলে যাত্রীদের অভিযোগ। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা বোলপুরের বাসিন্দা অর্পণ দাস বর্ধমান যাওয়ার জন্য এ দিন সকাল থেকে বোলপুর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলেন। বাস না মেলায় গাড়ি ভাড়া করে বর্ধমান যেতে হয়েছে তাঁকে। কুরুম্বা এলাকার বাসিন্দা শেখ রফিকুল ব্যক্তিগত কাজে রবিবার বোলপুর এসেছিলেন। এ দিন কুরুম্বা ফেরার উদ্দেশ্যে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে হাজির হন তিনি। কিন্তু বাস না পাওয়ায় চড়া দাম দিয়ে টোটোয় করে বাড়ি ফিরেছেন।
এমন অনেকেই এ দিন বাস না মেলায় অন্য যানবাহনের ভরসায় বাড়ি ফিরতে হয়েছে। শেখ সফিকুল, অর্পণ দাস, মঞ্জিরা বিবিরা বলেন, “দুর্যোগের কারণে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হলেও ভেবেছিলাম যাত্রী পরিষেবার জন্য রাস্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস থাকবে। কিন্তু তা না থাকায় চরম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে আমাদের।” বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির বোলপুর শাখার সহ সম্পাদক সুনীল ঘোষ বলেন, “দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন রুটের অনেক বাসই এ দিন চালানো যায়নি।’’ তবে সিউড়িতে বেশি বৃষ্টি না হওয়ায় বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন বাস মালিকেরা।